• ৪ বছরে একবার আসে, জন্মদিন ভোলে না কেউ
    আজকাল | ০১ মার্চ ২০২৪
  • রিয়া পাত্র একটা কথা খুব প্রচলিত, যার জন্য অপেক্ষা বেশি, তার কদর বেশি। এই যেমন ধরুন ২৯ ফেব্রুয়ারি। ক্যলেন্ডারে প্রতি মাসেই ২৯ তারিখ থাকলেও, ফেব্রুয়ারির মাসে গেলেই এদিনটা হাওয়া। দেখা মেলে ৪ বছর পর পর। স্বাভাবিক ভাবেই বাকিদের জন্মদিন বছর বছর এলেও, ৪ বছর পর পর জন্মদিন আসে বেশ কিছু মানুষের। সেরকম কজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, প্রিয়জনেদের জন্মদিন তাঁরা ভুলে গেলেও যেতে পারেন, কিন্তু তাঁদের জন্মদিন কেউ ভোলে না। এই ধরুন দে"জ পাবলিশং-এর অপু দের কথা। বাংলা প্রকাশন জগতে তিনি বেশ চেনা মুখ। সমাজ মাধ্যমে উঁকি দিয়ে দেখা গেল, পরিচিত জনেরা তাঁকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন "১২তম জন্ম দিবসের"। হিসেব করলে তো তাইই। ছোট থেকে এই চার বছরে একবার জন্মদিন বিষয়টা কীভাবে দেখেছেন? তিনি বলছেন,"মজার, বেশ মজার।" ছোটবেলায় বাড়িতে বাংলা ক্যালেন্ডার দেখে জন্মদিন আসত। বন্ধুরা জন্মদিনে স্কুলে লজেন্স নিয়ে আসত। তাই যে বছর ক্যালেন্ডারে ২৯ তারিখ আসত, কেবল সেবছরই বন্ধুদের লজেন্স খাওয়াতেন তিনি। বড় হয়ে বন্ধুদের মজা করে বলেন, তিন বছর বন্ধুরা জন্মদিনে খাওয়ালে, তিনি খাওয়াবেন একবার। মোরাজী দেশাইয়েরও একই দিনে জন্মদিন হওয়ায়, তুলনাও শুনতে হয়েছে অনেক সময়। ২৯ ফেব্রুয়ারি সাহিত্যিক জয়ন্ত দে"র জন্মদিন। তাঁর ছোটবেলায় জন্মদিন নিয়ে সেভাবে উদযাপন ছিল না। বাড়িতে সাধারণত ১৬ ফাল্গুনকে মনে রাখা হত বলেই জানালেন। এখন তিনি পরিচিত মুখ। ক্যালেন্ডারের হিসেবে তাঁর জন্মদিনের বয়স সবে ১৫। চেনা মুখেরা ফোন করে বলছেন,"আপনাকে তো মশাই জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোর সুযোগই পাই না।" দর্জিপাড়ার বছর ২৮-এর শুভ্রজিৎ গুপ্ত আবার শুরুতেই বললেন, "আমার এটা ৭ বছরের উদযাপন।" ২৯ ফেব্রুয়ারি নিয়ে যখন খুব একটা বুঝতেন না, তখনও দেখতেন তাঁর জন্মদিন পালন হয় না প্রতি বছর বাকিদের মতো। তবে বড় হয়ে বুঝেছেন, চার বছরে একবার আসে বলেই, তাঁর জন্মদিন ভোলে না কেউ। জানালেন, "শিক্ষক, বন্ধু, আত্মীয় যাঁদের সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ নেই, তাঁরাও এই বিশেষ দিনে ফোন করেন। এমনকি ইন্টারভিউ বোর্ডেও জন্মদিন নিয়ে উৎসাহ দেখেছি তুঙ্গে।" ডালিমতলার সোমা রায় আবার ছোট বোনের জন্মদিন এবার ২৯ তারিখ পালন করছেন ঠিকই, তবে অন্যান্য বছর বোনের মন খারাপের কথা ভেবে ২৮ তারিখেই বাড়িতে ছোট্ট উদযাপন করে থাকেন। বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালে কথা বলে দেখা গেল, অনেকেই ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রসবের দিন রাখতে চান না। যেমন, মুখার্জি ফার্টিলিটি সেন্টারের কর্ণধার ডা. শিউলি মুখার্জি জানালেন, সাধারণত বাড়ির লোকজন চান না ২৯ ফেব্রুয়ারি "ডেলিভারি ডেট" রাখতে। এই ২৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর হাতে এক শিশুর জন্ম হলেও, তার বাড়ির লোকজন মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। কারণ? বাচ্চাকে জন্মদিন হিসেবে কী বলবেন তা ভেবেই চিন্তিত, তাই চেয়েছিলেন "ডেলিভারি ডেট" হোক ১ মার্চ। হালকা হেসে নবজাতকের বাবা অঙ্কিত দাগা জানালেন, "স্ত্রীর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে আজই সিদ্ধান্ত নিতে হল।" এই চার বছরে একবার যাঁদের জন্মদিন, তাঁদের জন্য বিশেষ "ছাড়" দিচ্ছে এক নামী কেক প্রস্তুতকারক সংস্থা। কেকের ওপর ২৯ শতাংশ ছাড় আজকের দিনে অর্ডার করলে।
  • Link to this news (আজকাল)