বুধবার সন্ধের পরই ইঙ্গিত মিলেছিল যে হিমাচল প্রদেশে সম্ভবত সরকার টিকিয়ে রাখতে পারবে কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার সেটাই স্পষ্ট করে দিলেন দলের 'ক্রাইসিস ম্যানেজার' ডি কে শিবকুমার। দফায় দফায় মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু-সহ কংগ্রেসের নানা স্তরের নেতা ও বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকের পরে শিবকুমার বলেন, 'অল ইজ় ওয়েল। আমাদের সরকার পাঁচ বছরই থাকবে।'আপাতত যে সুখুই মুখ্যমন্ত্রী থাকছেন তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সাফ বক্তব্য, মতানৈক্য থাকলে সকলে মিলে সেটা মিটিয়ে নেওয়া হবে। তবে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা 'বিক্ষুদ্ধ' বীরভদ্র সিং-এর ছেলে বিক্রমাদিত্য বুধবার 'বঞ্চনার' দাবি করে পদত্যাগ করে পরে তা ফেরত নিলেও দলকে চাপেই রেখেছেন তিনি।এ দিনই ক্রস ভোট দেওয়া ৬ কংগ্রেস সদস্যের সদস্যপদ খারিজ করে দিয়েছেন স্পিকার। দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগ করে তাঁদের সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে। তাঁরা এই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে, মুখ্যমন্ত্রী সুখু রাজ্যসভা ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির পরাজয়ের দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন।হিমাচলের সঙ্কট কাটাতে শিবকুমারকে সেখানে পাঠিয়েছিল কংগ্রেস। তিনি দলের 'মান' রেখেছেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে শিবকুমার জানান, তাঁরা দলের সব বিধায়কদের সঙ্গে পৃথক ভাবে কথা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করেছেন। আগামী দিনে আরও আলোচনা হবে।দলের অন্দরে কিছু বিধায়কের ক্ষোভ ছিল। আর সরকারের কোনও কোনও জায়গায় ব্যর্থতা ছিল, সেটা মুখ্যমন্ত্রী মেনে নিয়েছেন। এর পরেই শিবকুমারের আত্মবিশ্বাসী ঘোষণা, 'আমাদের সরকার সুরক্ষিত। আর পাঁচ বছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ করবে।' সুখুর বাসভবনে এ দিনের বৈঠকে শিবকুমার ছাড়াও ছিলেন ছত্তিসগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা।সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সুখুকে আপাতত মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হচ্ছে না। শিবকুমার বলেন, 'সরকার এবং দলের মধ্যে সমন্বয় রাখতে ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংয়ের ছেলে বিক্রমাদিত্য সিং তাঁর ইস্তফাপত্র প্রত্যাহার করেছেন।'বিধানসভার স্পিকার কুলদীপ সিং পাঠানিয়া বৃহস্পতিবার জানান, বুধবার বিধানসভায় বাজেট বিলে সরকারের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য দলীয় হুইপকে অমান্য করায় ৬ বিধায়কের বিধায়ক পদ খারিজের ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবারই স্পিকার ১৫ জন বিজেপি বিধায়ককে বরখাস্ত করেছিলেন। তার জেরে বাজেট বিল পাশ করিয়ে নেয় সুখু সরকার। তবে, হাল ছাড়েনি বিজেপি। তারা ইতিমধ্যেই আস্থাভোটের দাবি জানিয়ে রাজ্যপাল শিবপ্রতাপ শুক্লার দ্বারস্থ হয়েছে।তবে, রাজনৈতিক মহলের অধিকাংশেরই ধারণা রাজ্যের সঙ্কট আপাতত কাটলেও লোকসভার পর যে ফের সেখানে 'অপারেশন লোটাস'-এর চেষ্টা হবে না, সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। ফলে এই 'দুর্বল' সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সুখুর সরকার আদৌ পাঁচ বছর থাকবে তো? সেই প্রশ্ন থাকছেই।