চাকরি জীবনের শেষ কয়েকবছরে এসে অন্যত্র বদলির নির্দেশ। কাকুতি-মিনতি করে আবেদন করেও মেলেনি অব্যাহতি। শেষমেশ সরকারি নিয়ম মোতাবেক রিলিজ অর্ডার দেন স্বয়ং ব্লক স্বাস্থ্য অধিকারিক। আর সেখানেই বিপত্তি বাঁধল।
সেই বদলি হয়ে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মী হাসপাতালে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের চেম্বারের সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন। এমনই ঘটনার জেরে শোরগোল পড়ল বাঁকুড়ার কোতুলপুর গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে। যদিও ওই সময় কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন না সেই কর্মী, এমনটাই দাবি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের।
কোতুলপুরের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা:দেবাঞ্জন ঘোষ জানান, ক'দিন আগে ওই ব্যক্তিশারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে একটি আবেদন করেন। পরে মেডিক্যাল বোর্ড তাঁকে ফিট ঘোষণা করে। তিনি লাইট ডিউটি করার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু, হাসপাতাল চত্বরে সব ডিউটি 'হেভি' হওয়ায় তাঁকে 'লাইট ডিউটি' করানোর জন্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিস বিষ্ণুপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এরপরেই তিনি 'চরম পদক্ষেপ' করেন।
যদিও ওই স্বাস্থ্য কর্মীর প্রয়াস ব্যর্থ হয়। জানা গিয়েছে, তিনি এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন এবং আপাতত সুস্থই রয়েছেন। তবে কী ভাবে হাসপাতালে এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটল? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। হাসপাতাল চত্বরের নিরাপত্তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এই ঘটনার পর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ থেকেই যাচ্ছে।এই প্রসঙ্গে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ড. দেবাঞ্জন ঘোষ বলেন, 'মেডিক্যাল বোর্ড ওই ব্যক্তিকে ফিট ঘোষণা করে। তারপর ও লাইট ডিউটি করতে চেয়েছিল। কিন্তু, সেই সুযোগ এই হাসপাতালে ছিল না। কারণ রোগীর চাপ থাকে প্রতিনিয়ত। ফলে এই আবেদন মানা সম্ভব ছিল না। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছিলাম আবেদনটি।' তিনি আরও বলেন, 'ওই কর্মীকে রিলিজ করা হয়েছে।'ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে হাসপাতাল চত্বরে। এক রোগীর আত্মীয় বলেন, ‘শুনলাম একজন নাকি হাসপাতালে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। অনেকে এখানে আসেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু, সেই জায়গায় কী ভাবে একজন স্বাস্থ্য কর্মী এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটাতে পারে? এই ঘটনার দায়িত্ব কার? সেক্ষেত্রে রোগীদের নিরাপত্তার কী হবে!’শুধু একজন নয়, আরও অনেকের কণ্ঠেই শোনা যাচ্ছে এই সুর। এখন ওই কর্মীর বিরুদ্ধে কড়া কোনও পদক্ষেপ করা হয় কিনা, সব নজর সেই দিকেই।