৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়লেই শুকিয়ে যাবে ৯০% হিমালয়! সতর্কবাণী বিজ্ঞানীদের
এই সময় | ০১ মার্চ ২০২৪
উষ্ণায়নের প্রভাব পড়েছে বিশ্ব জুড়ে। ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে জলবায়ুতে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এ নিয়ে ভারতকে সতর্কবার্তা শোনানো হয়েছে। ভারতের গড় তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি বাড়লে, তার প্রভাব হিমালয় সংলগ্ন অঞ্চলে পড়বে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে তথ্য। এর জেরে ওই অঞ্চলের ৯০ শতাংশ স্থান শুষ্ক হয়ে পড়বে বলে জানানো হয়েছে আশঙ্কার কথা।
ক্লাইমেট চেঞ্জ নামে একটি জার্নালে আবহাওয়া নিয়ে গবেষণার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে যে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেলে, হিমালয় সংলগ্ন ৯০ শতাংশ অঞ্চল খরার মুখোমুখি হবে। সেই সঙ্গে ওই অঞ্চলগুলিতে সেচ এবং পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দেবে বলেও করে দেওয়া হয়েছে সতর্ক।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য ভারতের ৮০ শতাংশ অঞ্চল দাবদাহের সম্মুখীন হবে। এর হাতে থেকে মুক্তির উপায়ও বাতলে দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। তাতে বলা হয়েছে, আবহাওয়া সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি মেনে দেড় ডিগ্রির মতো তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যদি তাপমাত্রায় লাগাম টানা না যায়, সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে বলে প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গবেষণাটি চালিয়েছিল ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অফ ইস্ট অ্যাংলিয়ার বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, তামমাত্রা ৩ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে, ভারতে ফুলের পরাগযোগ অর্ধেক কমে যাবে। তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি বৃদ্ধি পেলে এর পরিমাণ কমবে এক চতুর্থাংশ। ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে কৃষিক্ষেত্রে বড় প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।তাপমাত্রা বৃদ্ধির জেরে যে ভয়ানক খরার সম্মুখীন হবে, তা ৩০ বছরে একবার হয় বলে সতর্ক করে দিয়েছেন গবেষকরা। তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি কম হলে, তবেই কৃষি জমিকে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন। এছাড়া তাপমাত্রার বৃদ্ধিতে ভারতের ২১ শতাংশ কৃষি জমি শুকিয়ে যাবে বলে মত বিজ্ঞানীদের।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়াতে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানী রাচেন ওয়ারেন। পদক্ষেপ না নেওয়া হলে, এর প্রভাব প্রাণীদের মধ্যে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। এর হাত থেকে রক্ষা পেতে অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্রুত কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কমানোর উপর জোর দিয়েছেন তিনি।
তাঁর মতে, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলিসিয়াসের নিচে রাখা সম্ভব হলে বিশ্ববাসী উপকৃত হবে। ভারতের পাশাপাশি এই গবেষণায় অফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকার অঞ্চলগুলির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।