মুখ্যমন্ত্রীকে ‘মা দুর্গা’র সঙ্গে তুলনা, পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের মন্তব্যে বিতর্ক
এই সময় | ০২ মার্চ ২০২৪
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মা দুর্গার তুলনা। তুলনা টেনে বিতর্কে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক। সরকারি একটি মেলার অনুষ্ঠানের সভামঞ্চ থেকে তাঁর মুখে শোনা যায় বিতর্কিত মন্তব্য। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।শুক্রবার বর্ধমানের স্পন্দন মাঠে জেলা সৃষ্টিশ্রী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক বিধান রায়। সেখানেই স্বনির্ভর গোষ্ঠী সম্পর্কে উপস্থিত মহিলাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি একটা উদাহরণ দেব, আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মহিলা। তিনি মা দুর্গার মতো সমস্ত দিকেই কিন্তু তাঁর সেই সাফল্য ও কার্যক্রম করে আসছেন। আমি আপনাদের বলব, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তিনি যদি মা দুর্গার মতো কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন, তাহলে কেন পারবেন না? একটা জ্বলন্ত উদাহরণ আছে আপনাদের কাছে। আমি অনুরোধ করব, সেই উদাহরণকে সামনে রেখে আপনারা এগিয়ে চলুন।’পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিধান রায় এই সময় ডিজিটালকে বলেন, ‘সৃষ্টিশ্রী মেলা ছিল, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মেলা তাদের উৎসাহ প্রদানের জন্য তাদের তাদের মধ্যে যে মাতৃ শক্তি আছে দুর্গা শক্তি আছে তার উত্তরনের কথা বলা হয়েছে। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা সুতরাং তিনি যদি এভাবে করতে পারে আপনারও মহিলা তাঁদের উত্তরণ হতে পারে। মূলত মহিলা শক্তিকে জাগরিত করার ও উৎসাহ জাগানোর জন্যই বলা।’জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘যেখানে মা, বোন, দিদিদের একত্রিত করে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন করতে হত।’ তিনি জানান, আমার যতদূর জানা আছে, পরিসংখ্যানের নিরীখে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৭০ হাজারের মতো স্বনির্ভর দল গঠন হয়েছে। ৭ লাখ মানুষ কিন্তু এই স্বনির্ভর দলের সঙ্গে যুক্ত। এটা কিন্তু আমাদের একটা শক্তি। এটা নিছক একটা ভাবনা নয়, এটা আমাদের শক্তি। এই শক্তিকে আমরা কাজে লাগাচ্ছি। এ বার এই আর্থিক বছরে (২০২৩-২৪) স্বনির্ভর দল গঠনের লক্ষ্যমাত্রা ১৭০০। আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা ১৮৮০ কোটি টাকার মতো। আমরা ১৩০০-১৩৫০ দল গঠন করে ফেলেছি।যদিও, সরকারি মঞ্চ থেকে তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘আমরা বারংবার বলেছি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা তৃণমূলের দলীয় দলীয় নেতৃত্ব হিসেবে কাজ করছে। সরকার এবং দলের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই। তাই একজন সরকারি কর্মচারী হিসেবে জেলাশাসক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্তুতি করবেন বাংলায় এটাই স্বাভাবিক।’ বিজেপির বক্তব্য, এর তীব্র বিরোধিতা করছি। জেলাশাসকের এই মন্তব্যে তার নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। কয়েকদিন পরেই লোকসভা ভোট তাই নিরপেক্ষ ভোটের স্বার্থে অবিলম্বে জেলাশাসক বদলের দাবি জানাচ্ছি আমরা। পালটা, জেলাশাসকের মন্তব্যে সমালোচনার কিছু দেখছে না তৃণমূল। রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব প্রকল্পের রূপায়ণ করেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। সুতরাং জেলাশাসক নিজে কাজ করছেন।’ তাই তিনি বলেছেন। এটা নিয়ে বির্তকের কী আছে? প্রশ্ন তোলেন তিনি।