একটি বিবাহ বিচ্ছেদ মামলায় চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ এলাহাবাদ হাইকোর্টের। প্রেমের বিয়ের ক্ষেত্রে সম্পর্কের অবনতি সবচেয়ে বেশি হয় বলে মনে করছে উচ্চ আদালত। সেই সঙ্গে হিন্দু বিবাহ আইনে বিবাহ বিচ্ছেদের ভিত্তি সংশোধনের উপরও দেওয়া হয়েছে জোর।প্রকৃত ঘটনাটি কী?
৩০ বছর ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কর্মরত এক চিকিৎসক বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টে। তাঁর স্ত্রীও পেশায় ছিলেন একজন চিকিৎসক। ২০০৭ সালে হিন্দু আইন মেনে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। এটি ছিল সেনাবাহিনী চিকিৎসকের দ্বিতীয় বিয়ে। প্রেম করে এই বিয়ে হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
বিয়ের কয়েকদিন পর থেকে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির জেরে ২০১৫ সালে পারিবারিক আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন স্বামী। কিন্তু এই আবেদনের পরেই চিকিৎসক স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। সেই সময় পারিবারিক আদালত স্বামীর আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। পারিবারিক আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ২০১৯ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্বামী।
পর্যবেক্ষণে কী জানিয়েছে উচ্চ আদালত?
গত ২৯ জানুয়ারি অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ছিল বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলার শুনানি। বিচারপতি বিবেক কুমার বিড়লা এবং বিচারপতি দোনাদি রমেশের ডিভিশন বেঞ্চ বিবাহবিচ্ছদে নিয়ে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করে। বিচাপতিদের মতে, প্রেমের বিয়ে সবসময় দাম্পত্য জীবনের সম্পর্ককে প্রভাবিত করে।
দাম্পত্য কলহের কারণ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন দুই বিচারপতি। এই কলহের জন্য কে প্রকৃত দায়ি, তা বিবেচ্য নয় বলেও মত তাঁদের। অতীতের একাধিক ঘটনার রায় দিতে গিয়ে এই অভিজ্ঞতা তাঁদের হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা।
আইন সংশোধনে জোর
বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত যে আইন বর্তমানে আছে, তার ভিত্তি সংশোধনের উপরও জোর দিয়েছেন বিচারপতি বিবেক কুমার বিড়লা এবং বিচারপতি দোনাদি রমেশ। তাঁদের মতে, বর্তমান সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিবাহ বিচ্ছেদ আইনের ভিত্তি পরিবর্তন করা উচিত।
বেঞ্চের মতে, ১৯৯৫ সালে হিন্দু বিবাহ আইন যখন তৈরি করা হয়েছিল, তখন বিবাহকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করা হত। আর এ নিয়ে ছিল শ্রদ্ধা। এখকার মতো তখন এই পরিস্থিতি ছিলনা বলেও জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
বিবাহ বিচ্ছেদ মঞ্জুর সেনাবাহিনীর চিকিৎসকের বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন নিয়ে বেঞ্চ জানিয়েছে, স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে স্বামী থেকে আলাদা হয়ে বসবাস করছেন। এতে স্পষ্ট যে, স্ত্রী বিবাহ সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী নন। এটাকে স্বামীর প্রতি নিষ্ঠুরতা বলে মনে করছে উচ্চ আদালত। এরপরেই স্বামীর আবেদন মঞ্জুর করা হয়।