• পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ার শাস্তি, মেয়েকে বন্ধ ঘরে আটকে রাখলেন মা
    এই সময় | ০৩ মার্চ ২০২৪
  • বর্তমানে প্রতিযোগিতার যুগে সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে অভিভাবকরা কমবেশি চিন্তিত। কিছু সংখ্যক অভিভাবক রয়েছেন, যাঁরা পরীক্ষায় কম নম্বর কিংবা ওই ধরনের ঘটনা ঘটলে, সন্তানদের প্রতি কঠোর মনোভাব নিয়ে থাকেন। পড়াশোনার ক্ষেত্রে সামান্য ভুলও সহ্য করতে পারেন না। দিয়ে থাকেন বড় ধরনের শাস্তি।পরীক্ষায় কম নম্বর পাওয়ার জন্য সন্তানের প্রতি আচরণের একটি ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন এক অমানবিক মহিলা। যদিও এ ব্যাপারে মহিলার সমালোচনা করতে ছাড়েননি নেটিজেনদের একাংশ।

    ঘটনাটি কী ঘটেছিল?

    সোশ্যাল মিডিয়ায় করা পোস্টে কীভাবে ক্লাস টেস্টে কম নম্বর পাওয়ার জন্য শাস্তি দিয়েছিলেন, তা জানিয়েছেন মহিলা। গর্ব করে সেই কড়া শাস্তির বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন তিনি। মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ের বয়স ১৫ বছর। ক্লাস টেস্টে ‘বি’ গ্রেড পেয়েছিল সে। আর এতে তাঁর খুব রাগ হয়েছিল। এরপরেই মেয়কে কড়া শাস্তি দিয়েছিলেন তিনি।

    প্রায় দুই সপ্তাহ ফোন, ল্যাপটপ থেকে মেয়েকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। এছাড়া মেয়ে যে ঘরে থাকত, সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন টিভি। এমনকি বিছানা, বালিশ ও কম্বল কেড়ে নিয়েছিলেন। সবসময় দরজা ও জানলা বন্ধ করে রেখে দিয়েছিলেন মেয়েকে। খারাপ নম্বর পাওয়ার জন্য আরও শাস্তির দরকার ছিল কীনা, তাও পোস্টে জানতে চেয়েছিলেন মহিলা।

    অমানবিক আচরণের সমালোচনায় নেটিজেনরা

    পড়াশোনার জন্য সন্তানের প্রতি মায়ের এই অমানবিক আচরণের তীব্র নিন্দা করে সরব হয়েছেন নেটিজেনদের একাংশ। একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী মহিলাকে দানবের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ‘বি’ গ্রেড পাওয়ার জন্য বিছানা, কম্বল, ফোন কেড়ে নেওয়া উচিত হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

    ঘটনাটি লজ্জাজনক বলেও মন্তব্য করেছেন। আরেকজন লিখেছেন, পরীক্ষায় ৮০ থেকে ৮৯ শতাংশ নম্বর পাওয়ার জন্য এই ধরনের শাস্তি কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। যাঁরা এর জন্য শাস্তি দিয়ে থাকেন, তাঁরা বাচ্চার অভিভাবক হওয়া যোগ্য নয় বলে মনে করছেন দ্বিতীয় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী। তিনি বলেছেন, ‘বি’ গ্রেড পাওয়ার জন্য এই শাস্তি। ‘সি’ বা ‘ডি’ গ্রেডের শাস্তির কথা ভেবে শিউরে উঠেছেন।

    তৃতীয় একজন লিখেছেন, নম্বর কম পাওয়ায় জন্য যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তা শিশু নির্যাতনের সমতুল্য। তিনি মেয়েটির জায়গায় থাকলে, মহিলাকে ছেড়ে চলে যেতেন বলে করেছেন উল্লেখ। সেই সঙ্গে মেয়ের প্রতি ভালোবাসা দেখানোর জন্য দিয়েছেন পরামর্শ।

    সমাজবিজ্ঞানীরা কী বলছেন?পড়াশোনা নিয়ে সন্তানদের বেশি চাপ না দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের পরামর্শ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, অভিভাবকদের আচরণ অনেক সময় সন্তানকে কড়া সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দেয়। এতে মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটতে পারে। সেই সঙ্গে অভিভাবকদের সন্তানের সঙ্গে বন্ধুর মতো মেলামেশার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
  • Link to this news (এই সময়)