• Sheikh Shahjahan : হেফাজতেও যেন নিজেকে 'সম্রাট' মনে করছেন শেখ শাহজাহান!
    এই সময় | ০৩ মার্চ ২০২৪
  • সোমনাথ মণ্ডলতাঁর কথায়, সন্দেশখালিতে ‘বাঘে-গোরুতে’ একঘাটে জল খেত! তিনি সেখানকার বেতাজ বাদশা। আর তাঁকেই ভবানী ভবনের ইন্টারোগেশন রুমে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন সিআইডির নীচুতলার অফিসারেরা? তা কখনও হয়? ফলে, তিনি চুপ। মুখে রা টুকু কাড়ছেন না। যদি মুখ খুলতেই হয়, তা হলে তাঁর মুখোমুখি বসতে হবে পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের। ভবানী ভবনের লকআপে বন্দি থাকলেও শেখ শাহজাহান হাবভাবে তেমনই বার্তা দিচ্ছেন গোয়েন্দাদের। এমনটাই সূত্রের খবর।

    রাজনীতির কারবারে নাম লেখানোর পরে শাহজাহানের প্রিয় রঙ হয়ে উঠেছে সাদা। যতই তাঁর চরিত্রে নিন্দুকেরা ‘কাদা’ ছেটানোর চেষ্টা করুক না কেন! ধবধবে সাদা জামাকাপড়ে মোড়া নিজের ইমেজের সঙ্গে এতটুকু ‘কম্প্রোমাইজ’ করতে নারাজ তিনি। তাঁর সেই বাদশাহী মেজাজ লকআপের ভিতরেও অটুট। খাবার দাবারে খুব একটা রুচি নেই। ভাত-ডাল, সাধারণ শাক-সব্জিতে ভোজ সারতে হচ্ছে দু’বেলা। সিআইডি-র ক্যান্টিন এবং আলিপুরের একটি দোকান থেকে আসছে একদম সাদামাটা খাবার। স্বাস্থ্যের দিকেও নজর রাখতে চলছে নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা। ৫৬ দিন অন্তরালে থাকার পরে মিনাখাঁর বামনপুকুর থেকে গ্রেপ্তার হয়ে আপাতত তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালে।

    রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডি-র ডেপুটি ডিরেক্টর গৌরব ভারিল শেখ শাহজাহান এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী হামলার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন গত ৫ জানুয়ারি। সেই এফআইআরের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। তবে, পুলিশের আরও একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলাতেও শোন অ্যারেক্ট দেখানো হয়েছে সন্দেশখালির প্রভাবশালী নেতাকে।

    গত ৫ জানুয়ারি সেখানকার সরবেড়িয়াতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। ঘটনার আগে শাহাজাহান ফোন করে অনুগামীদের হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন কি না, সে বিষয়েই এখন বয়ান রেকর্ড করতে চাইছেন গোয়েন্দারা। তার পাশাপাশি প্রায় দু’মাস তিনি কোথায় ছিলেন, সে বিষয়েও তথ্য পেতে চাইছেন তাঁরা। সূত্রের খবর, ইন্টারোগেশন রুমে নিয়ে যাওয়া হলেও থ মেরে বসে থাকছেন শাহজাহান। প্রথমেই তিনি মেপে নিচ্ছেন, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে কারা আসছেন। পছন্দ না হলে বিরক্তি প্রকাশও করছেন প্রকাশ্যে।

    সূত্রের খবর, হামলার ঘটনার তদন্তভার ন্যাজাট থানার হাতে থাকলও রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষকর্তার নির্দেশে শাহজাহান গ্রেপ্তার হওয়ার অনেক আগে থেকে সিআইডি-র কয়েকজন গোয়েন্দা সক্রিয় ছিলেন। অভিযুক্তের লোকেশন ট্র্যাক করতে চেষ্টার খামতি রাখেননি তাঁরা। তবে সহজে ‘বাঘকে বন্দি’ করা যায়নি। সূত্রের খবর, শাহজাহান প্রথম দিকে সন্দেশখালির একটি দ্বীপে এক ‘ঘনিষ্ঠ’-র ডেরাতেই আত্মগোপন করেছিলেন।

    পুলিশ, ইডি এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থার নজর থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে জলেস্থলে চরও ছড়িয়ে রেখেছিলেন তিনি। কোনও এজেন্সির মুভমেন্ট হলেই বার্তা চলে আসছিল বাদশার কাছে। তবে আদালতের চাপে সেই সন্দেশখালির বাঘ এখন ‘খাঁচায়’ ঢুকলেও তাঁর স্বভাব বদলায়নি বলেই সিআইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে।
  • Link to this news (এই সময়)