'চেনা বামুনে'-ই ভরসা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আসনে , বড় পরীক্ষায় নামা BJP-র গৌরীশঙ্কর খেলা ঘোরাবেন?
এই সময় | ০৩ মার্চ ২০২৪
লোকসভার লড়াইয়ে বিধানসভার চার যোদ্ধাদের মাঠে নামিয়েছে গেরুয়া শিবির। মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে স্থানীয় বিধায়ক গৌরী শংকর ঘোষকেই ট্রাম্প কার্ড হিসেবে বেছে নিল বিজেপি। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কেন্দ্রে তাঁর হাত ধরেই ভোট বৈতরণী পার করতে চাইছে বিজেপি।মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে এবার পদ্ম প্রতীকে লড়ছেন মুর্শিদাবাদ বিধানসভার বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ। বিধায়কের পাশাপাশি বছর একান্নর গৌরীশঙ্করের দুধের ব্যবসা সহ বেশ কয়েকটি ব্যবসা রয়েছে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাশ করেন তিনি। ২০২১ সালে তৃণমূল প্রার্থী শাওনি সিংহ রায়কে ২৪৯১ ভোটে পরাজিত করে বিধানসভায় যান। এবার তিনিই মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী। উল্লেখ্য, প্রায় ৭৮ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে এই কেন্দ্রে।
গৌরীশঙ্কর ঘোষ নিজে বলছেন, ‘গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে আমরা অনেকটাই এগিয়ে ছিলাম। এবার প্রথম হব।’ বিজেপি শিবিরের দাবি, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা হলেও গত কয়েক বছরের পরিস্থিতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি বিরাট অংশ মুখ ঘোরাতে শুরু করছে। গত লোকসভা নির্বাচন থেকেই এই কেন্দ্রে ভোট বাড়াতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। সেই আশাতেই এবারও বাজিমাত করার অপেক্ষায় রাজ্য বিজেপি। বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘গৌরীশঙ্কর দক্ষ সংগঠক। বর্তমান বিধায়কও তিনি। প্রার্থী নিয়ে আমরা যথেষ্ট আশাবাদী। উত্তরপ্রদেশে বহু সংখ্যালঘু মুখ বিজেপির প্রতীকে জয়ী হয়েছে, এটা মনে রাখতে হবে।’ সংখ্যালঘু মানুষও আজ বিজেপির ছত্রছায়ায় এসেছে। সেই কারণে এই আসনে জেতাটাও অসম্ভব নয় বলে তাঁর দাবি।
উল্লেখ্য, ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত টানা এই কেন্দ্রে জিতে এসেছে সিপিএম। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালের লোকসভায় সিপিএম জয়ী হয়েছিল। ২০১৯ সালে এই আসনে প্রথম তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খান জয়ী হন। গত লোকসভা ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত নদিয়া জেলার করিমপুর বিধানসভায় তৃণমূলের ভোট ৮৭ হাজার ৫১৩ যা আগের বিধানসভা নির্বাচনের থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কমেছিল। অন্যদিকে, বিজেপির ভোট বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৭৩ হাজার ১৭৩টি। অর্থাৎ, বিধানসভায় প্রাপ্ত ভোটের থেকে প্রায় পঞ্চাশ হাজার বেশি। সিপিএম কংগ্রেসের মিলিত ভোট ছিল ৩৯ হাজার ৭০৬টি। বিজেপির দাবি, গত লোকসভা ভোটে আমরা প্রায় আড়াই লাখ ভোট পেয়েছিলাম। যার মধ্যে করিমপুর বিধানসভাতেই ভোট ছিল প্রায় ৭৪ হাজার। মুর্শিদাবাদ লোকসভার অন্তর্গত এই বিধানসভা কেন্দ্রটি খেলা ঘোরাতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। যদিও, মাঝে জেলা কমিটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। তবে সেই পুরনো খেলোয়াড়কেই বাজি ধরল বিজেপি।
অন্যদিকে, বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘লোকসভা ভোট প্রার্থী দেখে হয়না। প্রতীক দেখে হয়। দুই কেন্দ্রের অধিকাংশ বিধানসভায় আমরা এগিয়ে রয়েছি। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও আমরা এগিয়ে। ফলে মুর্শিদাবাদ পুনর্দখল সহ বহরমপুর আমাদের দখলে আসছে।’ যদিও ভোট বাক্সে মানুষ কী জনমত প্রতিফলিত করবেন, তা দেখার জন্য আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে রাজ্যবাসীকে।