এই সময়, মালদা: অপরিচিত দেখলেই ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি! মালদায় যেন ‘গণ-হিস্টিরিয়া’ তৈরি হয়েছে। শনিবার ইংরেজবাজার পুরসভা এলাকায় বাইরে এক মহিলাকে রাস্তার বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পেটান এলাকার একদল মহিলা। গত ২ সপ্তাহে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এই নিয়ে ১১টি ঘটনায় উদ্বিগ্ন পুলিশ।শনিবার দুপুরে ইংরেজবাজার শহরে পুরাটুলি জামতলি এলাকায় হিন্দিভাষী এক মহিলাকে বেঁধে পেটানো হয়। পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করে। রাত পর্যন্ত তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। অভিযোগ, ওই মহিলা নাকি শিশুচুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা ছোটন মৌলিক বলেন, ‘দু’জন মহিলা একটি বাড়িতে ঢুকে বাচ্চা চুরি করছিল। সেই সময়ে বাড়ির লোক দেখে ফেলায় চিৎকার করলে পাড়ার লোকজন ছুটে গিয়ে একজনকে ধরে ফেলে। আরেকজন পালিয়ে যায়।’
যদিও স্থানীয় এক মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ির পিছনের বাড়িতে কোনও লোক থাকে না। এ দিন দুপুরে ওই মহিলাকে ঘুরঘুর করতে দেখে সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য একটি বাড়িতে ধরে আনা হয়। এর পরেই লোকজন জড়ো হয়ে বাইরে নিয়ে গিয়ে মারধর শুরু করে।
মালদায় দু’চার বছর পর পর ছেলেধরার গুজব রটে। শেষ রটেছিল ২০২১ সালে। এ বছর এই গুজবের শুরু ইংরেজবাজার পুরসভা এলাকায় নিখোঁজ থাকা ষষ্ঠ শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর খুন হওয়ার ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই। প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু গুজব ভাইরাল করা হয়। তার মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে মহিলা ও শিশু নিখোঁজ হওয়ার বিবরণ।
আবার কোনওটায় লেখা সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে বেরিয়ে সন্দেহভাজন লোকের খপ্পরে পড়ে কোনও মতে বেঁচে ফেরার বিবরণ। পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, ‘এ বার মালদায় এমন গুজবের মূল উৎস সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার। পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পোস্টদাতাকে শনাক্ত করা হয়েছে। প্রথমে তাঁদের সতর্ক করা, পরে কাজ না হওয়ায় গণপিটুনির ক্ষেত্রে কয়েকটি ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে।’