ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। খুব শীঘ্রই তিনি ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আর বিচারপতির এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা বাংলাজুড়ে। বিচারপতির এই মন্তব্যে প্রেক্ষিত এবার প্রতিক্রিয়া দিলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গেপাধ্যায়।এই সময় ডিজিটালকে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোককুমার গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে তো তফাৎ হয়, ওঁর সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমার সিদ্ধান্ত মিলবে কী করে? ওঁ যদি রাজনীতিতে আসতে চায় সেটা ওঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার।' অশোক গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, 'হঠাৎ করে বিচারপতিরা রাজনীতিতে যান না, কিছু কিছু লোক তো গিয়েছেন, পদত্যাগ করে যাওয়ার ঘটনা খুব বিরল।' অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে এদিন 'ব্যতিক্রমী চরিত্র'-এর মানুষ বলেও মন্তব্য করেন অশোক গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের ঠিক আগেই একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, 'আমি খুব শীঘ্রই পদত্যাগ করতে চলেছি বিচারপতির পদ থেকে। আর আমি সেটা করব মঙ্গলবার। ইস্তফাই আমি দিতে চাই।' আর ইস্তফার পরে তিনি কী করবেন, সেটাও একপ্রকার জানিয়েই দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, 'রাজনৈতিক ময়দানেই যাব।' তবে কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন, তা স্পষ্ট করেননি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সেই দলটা যে তৃণমূল কংগ্রেস নয়, তা মোটামুটি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে কংগ্রেস, বিজেপি, বাম বা অনেক ছোট-ছোট দল আছে, সেইসব দলে যোগ দিলেও দিতে পারেন। তবে সেই তালিকায় তৃণমূলের নাম ছিল না। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য হল, 'ইতিহাসে আমরা মৌর্য সাম্রাজ্যের কথা পড়েছি, এখন চোখের সামনে চৌর্য সাম্রাজ্যকে দেখছি।'
তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত নিলেন কেন, উঠতে শুরু করেছে সেই প্রশ্নও। সেই প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, 'আমার মনে হয়েছে, আমি আদালতে যে কাজটা করি, সেই কাজের সময় শেষ হয়ে গিয়েছে। আমার অন্তর বলছে সেটা। এখন হয়ত আমায় বৃহত্তর ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে যেতে হবে।'
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিভিন্ন নির্দেশ ইতিপূর্বেই বিভিন্ন সময় তোলপাড় ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিকমহলে। এমনকী তাঁর বিভিন্ন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নাম না করে তীব্র সমালোচনাও করেছে শাসকদলের নেতারা। তাঁকে রাজনীতির আঙিনায় আসার কথাও বলা হয়েছে। এবার সরাসরি তাঁর মুখ থেকেই শোনা গেল এমন কথা।