আয়ু ফুরিয়ে আসছে কলকাতা পুরসভার একমাত্র গোলাপ বাগানের। তারা বুড়ো হয়েছে। এমনটাই জানা গিয়েছে পুরসভার উদ্যান বিভাগের একাধিক আধিকারিকের কাছ থেকে। তাঁদের যুক্তি, বাগানকে বাঁচাতে হলে দ্রুত বুড়ো গাছগুলিকে তুলে ফেলে নতুন গোলাপের চারা বসানো প্রয়োজন। এবারের শীতেও ফুল ফুটিয়েছে এই বাগান। এখনও কিছু গাছে ফুল রয়েছে। তবে বাগানের বিভিন্ন রংয়ের গোলাপ আর কত দিন দেখা যাবে, তা নিয়ে সংশয়ে পুরসভার উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞরাও।নয় নয় করে এই বাগানের বয়স ২১ বছর। ২০০৩ নাগাদ ম্যাডক্স স্কোয়্যারের ভিতরে এই গোলাপ বাগান তৈরি করেছিল কলকাতা পুরসভা। পুরসভার আওতাধীন এটাই শহরের একমাত্র গোলাপ বাগান। উদ্যান বিভাগের আধিকারিকদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, অন্তত ৩৫ প্রজাতির গোলাপ গাছ রয়েছে এই বাগানে। লাল, হলুদ, সাদা, দুধে-আলতা রং-সহ বিভিন্ন রংয়ের গোলাপ ফোটে এই বাগানে। সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচশোর মতো গোলাপ গাছ পোঁতা হয়েছিল সেই সময়ে।
উদ্যান বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, উম্পুনের সময়ে একটি বড় গাছ পড়ে বাগানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পরে সেই গাছ সরিয়ে ফের বাগানটিকে সাজানো হয়। সেই সাজানো বাগানই প্রবল সংকটে। এখানকার গাছগুলোকে লাগাতার পরিচর্যা করে গত কুড়ি বছর ধরে একটানা গোলাপ ফোটানো হয়েছে। কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগের উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ সর্বাণী রায় বলেন, ‘এই বাগানে এখনও অল্প কিছু গাছ রয়েছে, যেখানে আরও বার কয়েক ফুল ফুটবে। তবে বাগানের অধিকাংশ গাছই বুড়ো হয়ে গিয়েছে। তাদের আয়ুও কমে আসছে।’ উদ্যান বিভাগের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘এবার পুরোনো গাছ বদলে নতুন গোলাপ গাছ লাগানো প্রয়োজন। এই কাজ যাতে দ্রুত করার জন্য চেষ্টা চলছে।’
তবে শুধু গাছের বয়স বাড়ছে, তা নয়, গোলাপ গাছের নিয়মিত পরিচর্যার জন্য দক্ষ মালিরও প্রয়োজন হয়। উদ্যান বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন দক্ষ মালির সংখ্যাও কমছে। এখন জনা দুয়েক দক্ষ মালি পুরসভা এই গোলাপ বাগানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। সর্বাণীর বক্তব্য, ‘একটা গোলাপ গাছের আয়ু স্বাভাবিকভাবে অন্তত আট থেকে দশ বছর পর্যন্ত হয়। নিয়মিত যত্ন করলে আরও বেশি দিন বাঁচতে পারে। গোলাপ গাছের ক্ষেত্রে যত্নটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’ আগামী শীতের আগে গোলাপ বাগানের রং ফেরাতে যত্নের খামতিও মেটাতে চান পুর কর্তৃপক্ষ।