• মেদিনীপুরের মাটি ইংরেজদের হারাতে পারলে, গদ্দারদেরও পারবে: মমতা
    ২৪ ঘন্টা | ০৪ মার্চ ২০২৪
  • সুতপা সেন: সোমবার ছিল মেদিনিপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা। নিমতৌড়ির সেই সভা থেকে বিভিন্ন বিষয়ে নিজের বক্তব্য রাখেন তিনি। সেই সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১,৪৩৭ কোটি ১৭ লক্ষ টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করা হল সোমবার। মোট প্রায় ৭ লক্ষ ২০ হাজার মানুষকে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হল বলেও জানিয়েছেন তিনি।এখান থেকেই অন্যান্য জেলার প্রায় ১,৬৩৪ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনও করা হয়।

    তিনি বলেন, “আমি অভিযোগ জানানোর জন্য 'মুখ্যমন্ত্রীকে বলো' খুলেছিলাম। সেখানে এই তমলুকের মোট প্রায় ৬২ হাজার এর মতো অভিযোগ জমা পরেছিল। তারমধ্যে ৫৮ হাজার ২৪টি অভিযোগের নিস্পত্তি করা হয়েছে। আর পুরো পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মোট ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৪৮১টি অভিযোগ পেয়েছিলাম তারমধ্যে ১ লক্ষ ০৮ হাজার ২১০টি অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়েছে”।তিনি সভা থেকে দাবি করেন, ‘দিল্লি থেকে কিছু লোক ইলেকশনের সময় আসে। সারা বছর তাদের পাত্তা পাওয়া যায় না। এসে বলে ঘর ঘর মে পানি কৌন দে রাহা হ্যায়। না কী বিজেপি দে রাহা হ্যায়। তোমরা মাছের তেলে মাছ ভাজো। পঁচাত্তর শতাংশ টাকা আমরা দিই। তোমরা তো দাও শুধু পঁচিশ শতাংশ টাকা’।দিঘায় তৈরি হতে চলা মন্দির সম্পর্কেও কথা বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দিঘার জগন্নাথ মন্দিরটা দেখলে বুঝবেন একটা মন্দির হচ্ছে। পুরীর মন্দিরের যে উচ্চতা সেই উচ্চতার মন্দির হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জগন্নাথ, বলরাম আর সুভদ্রার মূর্তি তৈরি হয়ে গিয়েছে। মন্দির তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হলেই সেখানে স্থাপন করা হবে’।ছাড়াও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে তিনি বলেন, ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। কোনদিন টাকা দিলো না। সোমেন মহাপাত্র যখন মন্ত্রী ছিলেন তখনও চেষ্টা করেছিলো। আগামি দুই তিন বছরের মধ্যে আমরাই করে দেব। বারো বছর ধরে অনেক চেয়েছি আর চাইবো না। যেসব নেতারা বড় বড় কথা বলে আর আমাকে দিনরাত গালি দেয়, তোমরা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানটা করতে পারো না? শুধু বড় বড় কথা।‘নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘নন্দীগ্রামের কেসটা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। প্রায় আড়াই বছর হয়ে গেলো। কী হয়েছিলো না হয়েছিলো সেটার উত্তর তো একদিন মানুষ দেবে। চোরের মায়ের বড় গলা। পকেটমার দেখেছেন, পকেটমার! যে পকেটমারি করে সেই প্রথম চিৎকার করে। সবচেয়ে বড় পকেটমারি স্কুল এডুকেশনে কে করেছে, ভুলে গেছেন মেদিনীপুরের লোক। ওরা চাকরি খায় আর আমি চাকরি দিই‌। আমি কারও চাকরি খাই না, খাবো‌ও না। তবে মাথাকে যে আমি ছাড়বো না এটা আমি বলে দিচ্ছি’।শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ শানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘সবথেকে বেশি পেয়েছে, সবথেকে বেশি খেয়েছে যখন পার্টিতে ছিল। গরীব ছেলেমেয়ের চাকরি খেয়ে বসে আছে। এই সাধুর সাধুগিরি আমি ছাড়াবো’।তিনি আরও বলেন, ‘এই মাটিতে একদিন যদি আপনারা ইংরেজদের পরাস্ত করতে পারেন, তাহলে এই নির্বাচনে গদ্দারদের পরাস্ত করুন’।তিনি বলেন, ‘ইলেকশনের আগেই ঘরে ঘরে টাকা পাঠায়, ইডি পাঠায়। ওহে গদ্দার নন্দলাল। দিল্লির পাপের পয়সা আমরা নিই না’।এখানেই থামেননি তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তিনদিন আগে এসে বলেছেন তিনি নাকি ৪৭ হাজার কোটি টাকা বেঙ্গলকে দিয়েছেন আর আমরা নাকি সব খেয়ে নিয়েছি’।এর উত্তর দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘আমি সরকারের হিসাব বলছি। ২০১৪ থেকে ২০২১/২২ পর্যন্ত  মোট আবাস যোজনায় দিয়েছে ২৯,৮৩৪ কোটি টাকা। আর রাজ্য সরকার এই প্রকল্পে দিয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ আমাদের থেকে মাত্র ৯ হাজার কোটি টাকা বেশি দিয়েছেন। এই টাকায় মোট ৪৬ লক্ষ বাড়ি তৈরি হয়েছে। সত্যিটা স্বীকার করুন’।কেন্দ্রীয় এজেন্সি সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন, ‘এজেন্সি বলছে আমি কী করব! আমার তো এসব ভালো লাগে না। কিন্তু আমাকে বিজেপি বলছে এসব করতে। এত ভয় কিসের ! জনগনের উপর ভরসা করুন। জনগন যাকে মনে করবে তাকে ভোট দেবে’।এছাড়াও একশো দিনের কাজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘একশো দিনের কাজের বিকল্প প্রকল্প রাজ্যের। প্রকল্পের নাম 'কর্মশ্রী'। জব কার্ড হোল্ডাররা বছরে ৫০ দিন কাজ পাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে’। 
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)