গোবিন্দ রায়: পুলিশ নাকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে থাকবেন সন্দেশখালির শেখ শাহজাহান? সোমবার মামলার শুনানি শেষেও তা স্পষ্ট হল না। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শেষ হয়েছে। তবে এখনও স্থগিত রায়দান।
সোমবার শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি ইডি উপর হামলার ঘটনার তদন্তে সিট গঠনে স্থগিতাদেশের কথা আরও একবার জানান। তবে স্পষ্ট করে দেন শেখ শাহজাহানকে গ্রেপ্তারিতে কোনসময়েই বাধা ছিল না। যদিও এর আগেই তা স্পষ্ট করেছে আদালত। এবং তার পরই গ্রেপ্তার হন সন্দেশখালির ?বাঘ?। এদিন রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি প্রশ্ন ছুড়ে দেন। বলেন, ‘‘তদন্তে যদি স্থগিতাদেশ থাকে তাহলে কীভাবে শেখ শাহজাহানকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হল? কেন জেল হেফাজতে নেওয়া হল না?’’ এর পরই শাহজাহানকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানায় সিবিআই এবং ইডি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আইনজীবীকে হাই কোর্টে বলেন, ‘‘শাহজাহান-সহ বাকি যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। এই মামলা যদি সিবিআইকে হস্তান্তর করা না হয় তাহলে কীভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই?’’ ইডিও সিবিআই তদন্তের পক্ষেই সওয়াল করে। তাদের যুক্তি, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক রেশন দুর্নীতি মামলায় যুক্ত। শাহজাহানও যথেষ্ট প্রভাবশালী। তাই এই মামলা অবশ্যই সিবিআইকে হস্তান্তর করা প্রয়োজন।
পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে ভুরি ভুরি অভিযোগ করে ইডি। তদন্ত করতে যাওয়া ইডি আধিকারিকরা জখম হলেন। অথচ তাঁদের বিরুদ্ধেই কেন শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হল, তা নিয়ে প্রশ্ন করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এছাড়া পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতারও অভিযোগ তুলেছে ইডি। আইনজীবী বলেন, ‘‘গোটা তদন্ত প্রক্রিয়াকে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করছে রাজ্য পুলিশ। তাদের সঙ্গে যৌথ তদন্ত আমরা চাই না। তথ্য বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। অভিযুক্তের সঙ্গে আছে রাজ্য পুলিশ।’’
যদিও সেই অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন রাজ্যের আইনজীবী। ইডির তদন্তে রাজ্য পুলিশ হস্তক্ষেপ করছে না, সেক্ষেত্রে কেন মামলা সিবিআইকে হস্তান্তর করা হবে, পালটা সে প্রশ্নও তোলে পুলিশ। বলে রাখা ভালো, গত ৫ জানুয়ারি ইডির উপর হামলার ঘটনার তদন্তভার নেয় সিআইডি। স্থানীয় থানার উপর কেন আস্থা রাখতে পারল না পুলিশ, সে প্রশ্ন তোলে ইডি। এই মামলায় সব পক্ষের সওয়াল জবাব শেষ। তবে রায়দান এখনও স্থগিত।