Abhijit Gangopadhyay : '১৭ নম্বর কোর্ট আমাদের কাছে মন্দির...,'এজলাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের শেষবেলায় আবেগতাড়িত অনেকেই
এই সময় | ০৪ মার্চ ২০২৪
বিচারপতি পদে ইস্তফা দিতে চান অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, রবিবারই এমন খবর প্রকাশ্যে আসে। মঙ্গলবার ইস্তফা দেওয়ার কথা তাঁর। তার আগে সোমবার শেষবারে মতো এজলাসে এলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতির চেয়ারে তাঁকে শেষবারের মতো দেখতে এদিন বহু মানুষ ভিড় করেন। কোর্টরুমের মধ্যে তৈরি হয় এক আবেগগ মুহূর্ত।এদিন বেলা সোয়া দু'টোয় এজলাসে বসেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গাঙ্গুলি। তিনি বলেন, 'আমি ২৯ বছর কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবী পেশায় যুক্ত ছিলাম। সকলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকবে।' সেই সময় এক মহিলা মামলাকারী বলেন, 'আমি আপনার কাছ থেকে মামলায় অনেক সুরাহা পেয়েছি। আপনার জন্য আমার বাচ্চা চিকিৎসা পেয়েছিল। আমি এখনও আপনার জন্য খোরপোষের টাকা পাই। কাল খবর পেয়ে আজ আমি ছুটে এসেছি। আমি আপনার পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে চাই।'
মামলাকারীর এই কথা শুনে বিচারপতি বলেন, আপনার বাচ্চা কেমন আছে, ভালো আছে তো? আমি কারও পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম নিই না। এজলাসের ভিতরে তখন সাধারণ মানুষের ভিড়। কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে। ওই মহিলা মামলাকারী বলে ওঠেন, 'এই ১৭ নম্বর কোর্টটা ছিল আমাদের কাছে মন্দির। আপনি চলে গেলে আমাদের কী হবে।' যার প্রেক্ষিতে বিচারপতিকে বলতে শোনা যায়, 'আমার যাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে আমার জায়গায় অন্য কেউ আসবেন, তিনি নিশ্চয়ই আপনাদের সুরাহা করবেন।' এরপরেই চেয়ার ছেড়ে উঠে হাত জোড় করে নমস্কার করেন বিচারপতি। তারপর আইনজীবী ও সাধারণ মানুষের দিকে হাত নেড়ে শেষবারের মতো এজলাস ছাড়লেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, রবিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজের ইস্তফার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকেই তোলপাড় পড়ে যায় বাংলাজুড়ে। একইসঙ্গে তিনি যেহেতু রাজনীতিতে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন, তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য় রাজনীতিতেও ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। তবে তিনি কোন দলে যোগ দেবেন, সেই বিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে সেটা যে তৃণমূল কংগ্রেস নয়, তা মোটামুটি স্পষ্ট। এদিকে কোনও কোনওমহল থেকে দাবি করা হচ্ছে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন তিনি। কোনও কোনও জায়গা থেকে শোনা যাচ্ছে, তিনি বারাসত লোকসভা কেন্দ্র থেকে ভোটেও লড়তে পারেন। যদিও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে অবশ্য এই নিয়ে কিছু বলেননি। সেক্ষেত্রে ইস্তফা দেওয়ার পর বাস্তবেই কোন দলের হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি, এখন সেদিকেই নজর সকলের।