এই সময়: চিকেন পক্সে আক্রান্ত আশুতোষ কলেজের এক ছাত্রীর উত্তরপত্র জমা ঘিরে তৈরি হয়েছে টানাপড়েন। আশুতোষের তৃতীয় সেমেস্টার পরীক্ষার সিট পড়েছে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে। সাইকোলজির ওই ছাত্রী শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ব্রেবোর্নের অধ্যক্ষা শিউলি সরকারকে ফোনে জানান, তাঁর চিকেন পক্স ধরা পড়েছে। তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়।সেই রাতেই মৌখিক ভাবে বিষয়টি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক জয়ন্তকুমার সিনহাকে জানিয়ে রাখেন শিউলি। পরদিন, শনিবার সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর আগে ওই পরীক্ষার্থী, তাঁর পরিজন এবং ব্রেবোর্নের এক শিক্ষাকর্মী আইডি হাসপাতালে যান। ঠিক হয়, ওই পরীক্ষার উত্তরপত্র হাসপাতালে জীবাণুমুক্ত করে আলাদা খামে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হবে।
কিন্তু পরীক্ষার পরে উত্তরপত্র নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামকের দপ্তর অস্বীকার করেছে বলে খবর। লেডি ব্রেবোর্ন এবং আশুতোষ কলেজের তরফে বারবার চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় খাতা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় আজ, মঙ্গলবার ফের পরীক্ষা ওই ছাত্রীর। আইডি হাসপাতাল থেকেই তাঁর পরীক্ষা দেওয়ার কথা।
শিউলির কথায়, ‘শনিবার সকালে পরীক্ষা নিয়ামক প্রথমে পদ্ধতিগত ত্রুটির কথা বলেন। সেই অনুযায়ী, চিঠি থেকে ‘মৌখিক পরামর্শ’ শব্দ দু’টি বাদ দিই। নিয়ামকের পরামর্শেই আইডি হাসপাতালে মেয়েটির পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। জীবাণুমুক্ত করে আলাদা খামে উত্তরপত্র পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষা নিয়ামকের দপ্তর থেকে বলা হয়, খাতাটি যথাযথ ভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, ঠিক ভাবেই জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। তার পরেও শনিবার কলেজে ফিরে আসে ওই উত্তরপত্র। বাকি পরীক্ষার্থীদের খাতা জমা নেওয়া হয়।’
অধ্যক্ষা জানান, লিখিত অনুরোধ-সহ সোমবারও ওই উত্তরপত্র পরীক্ষা নিয়ামকের দপ্তরে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু জমা নেওয়া হয়নি। সোমবার ওই ছাত্রীর মা এ জন্য সংশ্লিষ্ট ফর্ম পূরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিয়েছেন। পরীক্ষা নিয়ামক শনিবার পাল্টা জানান, খাতা জমার ব্যাপারে আশুতোষ কলেজকে আবেদন জানাতে হবে।
আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ মানস কবি অবশ্য সোমবার বলেন, ‘কোনও নিরপরাধ ছাত্রীর যেন ক্ষতি না হয়, সেটা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিশ্চিত করতে হবে। পরীক্ষার্থীর খাতা জমা নেওয়া ও মূল্যায়নের আবেদন জানিয়ে আজই বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দিয়েছি। ছাত্রীর মায়ের চিঠিও ফরোয়ার্ড করা হয়েছে।’
অন্যদিকে, শিউলির দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের কাছে জানতে চেয়েছে, উত্তরপত্রটি থানায় রাখা হয়নি কেন? থানা আবার তাঁদের জানিয়েছে, কলেজ দিলে ওই উত্তরপত্র তারা নেবে না। পরীক্ষা নিয়ামকের দপ্তরকে তা দিতে হবে। এ সব নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে জয়ন্তর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপেরও উত্তর দেননি।