এই সময়, বৈদ্যবাটি: রিডিউস, রিসাইকল ও রিইউজ় ট্রিপল আর পদ্ধতিতে বৈদ্যবাটি শহরকে দূষণমুক্ত করতে বড়সড় পদক্ষেপ করল পুরসভা। সেই সঙ্গে বাতিল সামগ্রীর পুর্নব্যবহারেও নজির গড়ল বৈদ্যবাটি। সোমবার দিল্লি রোড লাগোয়া বৈদ্যবাটি ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ডে প্রকল্পের সূচনা করেন স্থানীয় বিধায়ক অরিন্দম গুঁই, বৈদ্যবাটির পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো, সাফাই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলার অমৃত ঘোষ। এ ছাড়াও ছিলেন দুই কাউন্সিলার আলপনা দাস ও মহুয়া ভট্টাচার্য এবং স্যানিটারি ইনস্পেক্টর কৃষ্ণেন্দু কুণ্ডু। পুর কর্তৃপক্ষের কথায়, কয়েক বছরের মধ্যে গোটা রাজ্যের বাকি সমস্ত পুরসভার কাছে বৈদ্যবাটিকে তাঁরা মডেল হিসেবে তুলে ধরতে চান।বৈদ্যবাটি পুরসভা সূত্রে খবর, গঙ্গার পশ্চিম দিকের এই শহরকে আবর্জনা ও দূষণমুক্ত রাখতে বর্জ্য হ্রাস ও বর্জ্যের পুর্নব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডের প্রতিটি রাস্তাঘাট পরিষ্কার রাখতে সাফাই বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ে তাই বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছে। সে জন্য সুপারভাইজ়ারদের ওয়াকিটকি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জিপিএসের মাধ্যমে সাফাইকার্যে ব্যবহৃত গাড়িতে নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ করা হবে। পুর কর্তৃপক্ষের কথায়, স্বচ্ছ ভারত ২.০ গাইড লাইন মেনে আবর্জনামুক্ত শহর গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে পুরসভা।
বাড়ির বাতিল সামগ্রী, ব্যবহারযোগ্য পুরোনো জামাকাপড়, জুতো ও ছোটদের খেলনা—সব কিছু নিয়ে একটি স্টোর খোলা হয়েছে। যেখানে শহরবাসী ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মারফত এমন সব কিছু দান করতে পারবেন। আবার যে সমস্ত পুরবাসীর জামাকাপড় বা শিশুদের খেলনা প্রয়োজন তাঁরা ওই স্টোর থেকে নিখরচায় তা নিতে পারবেন।
সাফাই বিভাগের দায়িত্বে থাকা কাউন্সিলার অমৃত ঘোষ বলেন, ‘অনেকের বাড়িতে পুরোনো জামাকাপড় আছে। যেগুলি ধুয়ে নিয়ে অনায়াসে পরা যায়। যাঁদের আছে তাঁদের থেকে নিয়ে, যাঁদের নেই তাঁদের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যেই এই স্টোর চালু করা হয়েছে। যাঁদের বাড়িতে বাচ্চার অঢেল খেলনা আছে, তাঁদের আবেদন করেছি সেই খেলনা স্টোরে দিয়ে যেতে।’ প্রথম দিনেই স্টোরে দারুণ সাড়া মিলেছে বলে দাবি পুর কর্তৃপক্ষের।
এ সবের পাশাপাশি নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ও থার্মোকলের থালা-বাটি ব্যবহার বন্ধেও পুরবাসীকে সচেতন করার জন্য একগুচ্ছ ট্যাবলোর উদ্বোধন করা হয়েছে। এ দিন বিধায়ক অরিন্দম গুঁই বলেন, ‘পুরসভা দেড়শো বছর পালনের সময় সবুজ শহরের তকমা পেয়েছে। আমরা এক বছর ধরে লাগাতার প্লাস্টিকমুক্ত শহর গড়ার প্রক্রিয়া জারি রেখেছি। এ বার প্রথম আমরা একটি স্টোর খুলেছি। যেখানে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলি নানা সুযোগ সুবিধা পাবে।’
পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা কেন্দ্রের বিচারে রাজ্যের মধ্যে স্বচ্ছ শহর হিসেবে প্রথম হয়েছি। সেই ভাবনা থেকেই আমরা বর্জ্য হ্রাস ও বর্জ্যের পুর্নব্যবহারের বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছি। এই বিষয়টি আগামী দিনে মডেল হবে।’ পুরসভার স্যানিটারি ইনস্পেক্টর কৃষ্ণেন্দু কুণ্ডু বলেন, ‘গঙ্গার ধারে প্রাতঃকৃত্য ও মৃত গবাদি পশু ফেলা বন্ধে ভ্রাম্যমাণ ভুটভুটিতে প্রচার অভিযান শুরু করেছে পুরসভা।’