গর্ভপাত সাংবিধানিক অধিকার, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ফ্রান্সের
এই সময় | ০৫ মার্চ ২০২৪
গর্ভপাতকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিল ফ্রান্স। এ ব্যাপারে ফরাসি পার্লামেন্টে একটি সংবিধান সংশোধনী বিল গৃহীত হয়েছে। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে গর্ভপাতকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হল। নারী অধিকার গোষ্ঠীগুলি সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, কড়া সমালোচনা করেছে গর্ভপাত বিরোধী সংস্থাগুলি।গর্ভপাতকে স্বীকৃতি দিল ফ্রান্স
সোমবার ফ্রান্সের পার্লামেন্টে গর্ভপাতকে স্বীকৃতি দিতে সংবিধান সংশোধনী বিলটি উত্থাপন করা হয়েছিল। ফরাসি সংবিধানের ২৫ তম সংশোধনী প্রস্তাব আনা হয়। বিলের পক্ষে সায় দিয়েছেন ৭২০ জন সদস্য। বিপক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র ৭২। বিলটি গৃহীত হওয়ার পর পার্লামেন্টের সদস্যরা দাঁড়িয়ে ঐতিহাসিক মুহুর্তটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। ২০০৮ সালে শেষবার সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল ফ্রান্সে।
পার্লামেন্টে গর্ভপাত সংক্রান্ত বিলটি গৃহীত হওয়ার পর প্যারিসের আইফেল টাওয়ার আলোকিত হয়ে ওঠে। উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন সেখানে জড়ো হওয়া গর্ভপাত অধিকার রক্ষার কর্মীরা। করতালি দিয়ে ওঠেন তাঁরা। সেই সঙ্গে টাওয়ারের বিশাল স্ক্রিনে ফুটে ওঠে এক বিশেষ বার্তা। তাতে লেখা ছিল, ‘My Body My Choice’।
প্রসঙ্গত, আমেরিকা এবং অন্যান্য দেশের তুলনায় ফ্রান্সে গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে মত জানিয়েছে অধিকাংশ মানুষ। ১৯৭৪ সালে একটি আইনের মাধ্যমে ফরাসি নারীদের গর্ভপাতকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ছিলনা কোনও সাংবিধানিক স্বীকৃতি। এতদিন তারই দাবি জানিয়ে আসছিলেন মহিলারা। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশটির প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ গর্ভপাতকে বৈধ বলে মনে করছেন।
কী বলেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট
ফারাসি মহিলাদের গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকারকে ফ্রান্সের কাছে গর্বের বিষয় বলে মনে করছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ। গর্ভপাতের অধিকার সংক্রান্ত একটি বার্তা সারা বিশ্বে দেওয়া হল বলে জানিয়েছেন তিনি।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি গর্ভপাতকে সাংবিধানিক অধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশটির নারী অধিকার কর্মী স্লিমানি। এটা নারী জাতির জয় বলে মনে করছেন তিনি। ফ্রান্সের অ্যাসোসিয়েশন অফ ক্যাথলিক ফ্যামিলির সভাপতি প্যাস্কেল মরিনিয়র জানিয়েছেন যে ফরাসি সরকারের এই পদক্ষেপ, গর্ভপাত বিরোধীদের পরাজয় হয়েছে।
সরকারে সমালোচনায় বিরোধীরা
গর্ভপাতের সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিয়ে ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে দেশটির বিরোধী দলগুলি। নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী নেতা মেরিন লে পেন। সাংবিধানিক স্বীকৃতি গর্ভপাতকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবে বলে জানিয়েছেন তিনি।