ভাঙাচোরা মাটির বাড়িত বাস গ্রামের প্রধানের, সবজি বিক্রেতা উপপ্রধান
২৪ ঘন্টা | ০৫ মার্চ ২০২৪
চম্পক দত্ত: ভাঙাচোরা বাড়িতে বসবাস প্রধানের। উপপ্রধান সবজি বিক্রেতা, সততার সঙ্গে জীবনযাপন। দুর্নীতি নিয়ে যখন তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি, সেদিক দিয়ে চন্দ্রকোনার এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-উপপ্রধান নজির বলে মনে করছেন সকলে। বাম ও বিজেপি প্রধান-উপপ্রধানের আর্থিক অনটনের কথা মানলেও তাদের দাবি, সিপিএম থেকে ধার করা উপপ্রধান আর তৃণমূলের সবাই চোর তাই সততা বেশিদিন থাকবে না।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের বান্দিপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত বর্তমানে তৃণমূলের দখলে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠে তৃণমূল ও বিজেপি। জানা যায়, গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫ টি আসনের মধ্যে বিজেপির দখলে যায় ৭ টি, তৃণমূলের দখলে যায় ৭ টি আর সিপিএম ১ টি আসনে জয়ী হয়। বোর্ড গঠনকে ঘিরে এই গ্রাম পঞ্চায়েতে চরম টানাপোড়েন প্রকাশ্য এসেছিল বারেবারে।দীর্ঘদিন এই গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন স্থগিত থাকলেও শেষমেশ সিপিএম থেকে তৃণমূলে যোগদান করানো হয় সিপিআইএমের জয়ী প্রার্থী তরুণ সামন্তকে। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচন করা হয় খারুসা গ্রামের জয়ী তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য পিঙ্কি দোলইকে আর উপপ্রধান করা হয় আটঘরা গ্রাম থেকে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএম থেকে আসা তরুণ সামন্তকে। চন্দ্রকোনা বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক অরুপ ধাড়ার হাত ধরে বিধায়ক কার্যালয়ে ঘাসফুলের পতাকা হাতে নেন এবং পরিবর্তে উপপ্রধান পদে বসানো হয় সিপিএম থেকে আসা এই তরুণ সামন্তকে।কিন্তু এই প্রধান ও উপপ্রধান কেন আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে চন্দ্রকোনায়? রাজ্যে যেখানে শাসকদলের নেতাদের অট্টালিকা বাড়ি,একাধিক গাড়ি। এমনকি একাধিক নেতার বিরুদ্ধে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। ঠিক সেই সময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপ প্রধানের জীবন-জীবিকা একেবারেই আলাদা। গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তরুণ সামন্ত পেশায় সবজি বিক্রেতা, নিয়ম করে সকালে বাজারে আসেন সবজি বিক্রি করেন তারপর সময় মতো গ্রাম পঞ্চায়েতে যান।অপরদিকে, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পিঙ্কি দোলইয়ের পরিবার নিয়ে ভাঙাচোরা মাটির বাড়িতে বসবাস। তার দাবি, শুধু চাই মাথার ছাদ হিসাবে অল্প একটু আবাস যোজনার বাড়ি। তবে প্রধান আর উপ-প্রধানের এই ধরনের জীবন যাপন সাধারণত চোখে পড়ে না বললেই চলে। প্রতিবেশী থেকে শাসক বিরোধী সকলেই একসুরে প্রধান উপপ্রধানের এহেন জীবন যাত্রার কথা সত্যি তা মানলেও শাসকদল তৃণমূল ও তার নেতাদের রাজ্য জুড়ে যা দুর্নীতি তাতে কতদিন এই প্রধান উপপ্রধান নিজেদের সাধারণ হিসাবে ধরে রাখতে পারবে তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে।পাল্টা শাসক দলের বক্তব্য়, বিরোধীদের ভালো কিছু চোখে পড়ে না খালি অপপ্রচার করার জন্য দুর্নীতি নিয়ে গোলা ফাটানো হয়।সর্বস্তরের মানুষকে আমাদের নেত্রী অগ্রাধিকার দেন তারই প্রমাণ এই গ্রাম পঞ্চায়েত।