• Supreme Court : ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত সাংসদ-বিধায়কদের রক্ষাকবচ নয়, সুপ্রিম কোর্টের এই বার্তাগুলি নাগরিকদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ
    এই সময় | ০৫ মার্চ ২০২৪
  • সংসদে বা বিধানসভায় কোনও জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠলে, রক্ষাকবচ পাবেন না বলে সোমবার জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এরই পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতেই পারে বলে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। এখন চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক জনপ্রতিনিধিদের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় কী বলেছে শীর্ষ আদালত। যা, প্রতিটি নাগরিকদের জানা উচিত।সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

    সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে যে সংসদ বা বিধানসভার ভিতরে প্রশ্ন সংক্রান্ত বা অন্য কোনও বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠলে, তা সংবিধানের ১০৫ এবং ১৯৪ অনুচ্ছেদের বিরোধী। এই অনুচ্ছেদগুলি সংসদ বা বিধানসভার অভ্যন্তরে আলোচনার পরিবেশ বজার রাখার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আর এটা না মানলে, সংবিধান অবমাননার আওতায় পড়বেন জনপ্রতিনিধিরা।

    প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতি বেঞ্চের আরও পর্যবেক্ষণ যে জনপ্রতিনিধিদের ঘুষ নেওয়া বা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া অন্যায়। সংসদ বা বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে সমানভাবে প্রযোজ্য। এই ধরনের অভিযোগ থেকে জনপ্রতিনিধিদের রেহাত করা যাবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠলেই, মামলা করা যাবে বলে পর্যবেক্ষণে জানানো হয়েছে।

    শীর্ষ আদালতের মতে, কোন সাংসদ বা বিধায়ক ঘুষ কাণ্ডে জড়িয়ে পড়লে, তা ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রের ভিত্তিকে দুর্বল করে। সংবিধানের মূল্যবোধ এবং আদর্শকে ধ্বংস করে। এরই পাশাপাশি সাংসদ বা বিধায়কের সততা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে বলে মনে করছে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ।

    কোন মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম রায়?

    ঘটনার সূত্রপাত ১৯৯৩ সালে। তৎকালীন নরসিমা রাও মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল বিরোধী দলগুলি। খুব সামান্য ভোটের ব্যবধানে নিশ্চিত পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল কংগ্রেস সরকার। সেই সময় ঘুষের বিনিময়ে জেএমএম নরসিমা সরকারকে ভোট দিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এই সংক্রান্ত একটি মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়।

    ১৯৯৮ সালে সেই মামলায় জনপ্রতিনিধিদের ফৌজদারি মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য রক্ষাকবচ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। নিজেদের পুরনো সেই রায়কে খারিজ করে দিল প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ। এর আগে, ২০১২ সালে রাজ্যসভা নির্বাচনে জেএমএম বিধায়ক সীতা সোরেনের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে ভোটদানের অভিযোগ ওঠে।

    সেই সময় তদন্তে নেমে বিধায়কের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছিল সিবিআই। সেই মামলাকে চ্যালেঞ্জ করে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন সীতা সোরেন। হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করলে, সুপ্রিম কোর্টে মামলা ঠুকেছিলেন জেএমএম বিধায়ক। ২০১৯ সালে সেই মামলাটি বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ। তারই শুনানির পর ৪ মার্চ দেওয়া হল রায়।
  • Link to this news (এই সময়)