• আমেরিকা-লন্ডন-প্যারিস-ভেনিস! ৫০ দেশ ঘোরা 'ভ্রমণবাবু'র ঝোলায় কিন্তু সেই চিঁড়ে আর গুঁড়ো দুধ...
    ২৪ ঘন্টা | ০৬ মার্চ ২০২৪
  • প্রদ্যুত দাস: কাজি নজরুল ইসলামের লেখা ছোটবেলার সেই অতিপরিচিত কবিতার লাইন-- ''থাকব না'কো বদ্ধ ঘরে/ দেখব এবার জগৎটাকে''। বিশ্বভ্রমণের ইচ্ছে থাকে সকলেরই। কিন্তু তা সম্ভবপর হয় না অনেক সময়ই। হয় না হাজার কারণে। হয় না বলে মধ্যবিত্তের সেই ইচ্ছে চাপা পড়ে যায় বহু দায়িত্বের নীচে। অনেক সময় সঙ্গ দেয় না আর্থিক সক্ষমতাও।

    তবুও কেউ কেউ পারে এই সব প্রতিবন্ধকতা ঠেলে সরিয়ে দিয়ে নিজের ইচ্ছে পূরণ করতে। যেমন পেরেছেন জলপাইগুড়ি শহরের গোপাল বর্ধন। ছোট্ট এই শহরের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বভ্রমণে পাড়ি দিয়ে ইতিমধ্যেই তিনি ঘুরে এসেছেন প্রায় ৫০টি দেশ। জলপাইগুড়ি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৭৬ বছরের এই প্রবীণ এনার্জিতে উজ্জীবনে আজও ছেলে-ছোকরাদের অনায়াসে হার মানান। পেশায় দলিললেখক হলেও নেশা তাঁকে দৈনন্দিন জীবনের চেনা সীমানা থেকে টেনে নিয়ে গিয়েছে বহু দূর। তাই বিশ্বভ্রমণই তাঁর নেশা হয় দাঁড়াল।

     

    তাঁর বাড়িতে ঢুকে বসার ঘরে গেলেই চোখে পড়ে আলমারিভর্তি দেশ-বিদেশের স্মারক। দেওয়ালে বাঁধিয়ে রাখা রয়েছে তাঁর দেশভ্রমণের অসংখ্য স্মৃতি। চিন, আমেরিকা, সুইজারল্যান্ড, কানাডা, লন্ডন-- বাদ নেই কিছুই। তাঁর মুখ থেকেই জানা যায়, সুইজারল্যান্ডে গিয়ে কীভাবে হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। পরে হোটেল কর্তৃপক্ষই তাকে খুঁজে ফিরিয়ে আনেন। হোটেলের কর্তব্য়পরায়ণতায় মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি।২০০৪ সাল থেকে তাঁর এই দেশভ্রমণের শুরু। তাঁর পরিবারও তাঁকে যথেষ্ট উৎসাহ জুগিয়ে এসেছে। তাঁর মাসের রোজগারের একটা অংশ তিনি বছরের শুরু থেকেই জমিয়ে রাখেন এজন্য। তা দিয়েই চলে দেশভ্রমণের খরচ-খরচা। সেসময়ে তাঁর সঙ্গে থাকে গুঁড়ো দুধের একাধিক কৌটো, এক ঝোলা চিঁড়ে। সব দেশের খাবার তাঁর মুখে না রুচলেও কানাডায় এক্কেবারে বাঙালি খাবারই চেখে দেখেছেন তিনি।পাড়ায় 'ভ্রমণবাবু' নামেই বেশি পরিচিতি তাঁর। শরীরে বয়স কিছুটা থাবা বসালেও দমেননি তিনি। শরীর কিছুটা সুস্থ হলেই ফের পাড়ি দিতে চান বিদেশে। আজও সময় পেলেই পাড়ার সকলে তাঁর কাছে শুনতে আসেন তাঁর দেশভ্রমণের কাহিনি। রবীন্দ্রনাথের 'তাসের দেশে'র রাজপুত্রের মতো 'ভ্রমণবাবু' গোপালও আবার বলতে চান-- 'এলেম নতুন দেশে'!
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)