Digital Agriculture Project : উপগ্রহ-চিত্রে ফলনের হিসেব কষতে ডিজিটাল এগ্রিকালচার
এই সময় | ০৬ মার্চ ২০২৪
সুপ্রকাশ মণ্ডলকত ধানে কত চালের হিসেব হয়তো অনেকে জানেন। কিন্তু রাজ্যে কত জমিতে কোন চাষ কতটা হয় এবং ফলনই বা কতটা--এ বার সেই তথ্য মিলবে এক ক্লিকেই। রাজ্যের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, জৈব-প্রযুক্তি এবং কৃষি দপ্তর মিলে চালু করতে চলেছে নতুন প্রকল্প--ডিজিটাল এগ্রিকালচার। কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষককল্যাণ মন্ত্রকের সঙ্গে যৌথ ভাবে চালু হতে চলা এই প্রকল্পে চাষাবাদের হিসেব-নিকেশ পেতে সাহায্য নেওয়া হবে উপগ্রহ-চিত্রের।
রাজ্যে কোন ফসলের উৎপাদন কত পরিমাণ হবে, তার খুঁটিনাটি তথ্য জানা থাকবে। সেই উৎপাদনে ধান-গম-আলুতে রাজ্যের প্রয়োজন মিটবে কিনা বা কত উদ্বৃত্ত হবে--তার হিসেবও আগে থেকে করা যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কত ফসল নষ্ট হতে বসেছে, তার হিসেবও মিলবে দ্রুত। এই হিসেব কষার জন্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মীদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে সম্প্রতি।
নতুন ব্যবস্থায় খাদ্যসুরক্ষা প্রকল্পে বড় সুরাহা হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি এবং জৈব-প্রযুক্তি দপ্তরের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘রাজ্যে বিভিন্ন মরশুমে কোন এলাকায় কোন ফসলের ফলন কত হয়, তা জানতে এখনও কর্মীদের দেওয়া তথ্যেই নির্ভর করতে হয়। পুরোপুরি নিখুঁত তথ্য পাওয়া বেশ কঠিন। রাজ্যের ভাঁড়ারে কোন খাদ্যশস্য কত মজুত রয়েছে, না থাকলে কোন শস্য কত আমদানি করতে হবে--তারও বিশদ তথ্য সরকারের হাতে থাকবে নতুন ব্যবস্থায়।’
ঠিক কী ভাবে কাজ হবে এই প্রকল্পে? কৃষি দপ্তরের কর্তারা জানান, মূলত কৃত্রিম উপগ্রহের পাঠানো ছবির উপরে ভিত্তি করেই তৈরি হচ্ছে ‘ডেটাবেস’। উপগ্রহ-চিত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন মরশুমে রাজ্যের কোন প্রান্তে কত পরিমাণ জমিতে কী চাষ হচ্ছে, তার বিস্তারিত হিসেব নেওয়া হবে। ফলন কেমন হবে, তারও আন্দাজ মিলবে। ঝড়, বন্যা বা অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি হলে তারও হিসেব নিখুঁত ভাবে তুলে ধরতে পারবেন প্রশিক্ষিত কর্মীরা।
উজ্জ্বল জানান, কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের সঙ্গে যৌথ ভাবে ‘ডিজিটাল এগ্রিকালচার’ প্রকল্প চালু হচ্ছে। প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। দুই সরকার মিলেই ব্যয় বহন করবে। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার সল্টলেকে এই বিষয়ে কৃষি দপ্তরের কর্মীদের প্রশিক্ষণ হয়েছে। ধান, গম, পাট, ভুট্টা, আলু, সর্ষে, আখ এবং স্বল্প সময়ের ফসল হিসেবে তিল এবং বাদাম চাষের তথ্য-ভাণ্ডার প্রাথমিক ভাবে তৈরি করা হবে।
আগামী পাঁচ বছর আপাতত এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করা হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃষিই এখনও বাংলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড। ফসলের ফলনের আগাম নিখুঁত তথ্য হাতে থাকলে ভবিষ্যতের যে কোনও পরিকল্পনা আরও ভালো ভাবে করা যায়। প্রশাসনের কাজও অনেক সহজ হয়ে যাবে।