• ভারতকে ‘আল্টিমেটাম’ দিয়ে ফ্রি-তে চিনা সেনা!
    এই সময় | ০৬ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়: একই দিনে সেনা সরানো নিয়ে ভারতকে আল্টিমেটাম দিয়ে চিনের সঙ্গে নয়া প্রতিরক্ষা চুক্তি করে ফেলল মালদ্বীপ। বুলি করার হলে কি এত অনুদান দিতাম— সোমবারই ইঙ্গিতে মালদ্বীপকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করার মানসিকতা নেই ভারতের।কিন্তু বরাবরের ‘চিনপন্থী’ হিসেবে পরিচিত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু নিজের অবস্থানেই অনড়। ১০ মে-র পর কোনও ভারতীয় সেনা, এমনকি অসামরিক পোশাকেও থাকবে না— দিল্লিকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গেল মুইজ্জুকে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে তাঁর এই তর্জনগর্জনের পিছনে রয়েছে এ দিনই চিনের সঙ্গে সই করা একটি সামরিক চুক্তি।

    সেই চুক্তি মোতাবেক, দ্বীপরাষ্ট্রটিকে এবার ‘বিনামূল্যে’ সামরিক সহায়তা দেবে চিন। মালদ্বীপকে সম্প্রতিই ১২টি ইকো ফ্রেন্ডলি অ্যাম্বুল্যান্স ‘উপহার’ দিয়েছেল চিন। তার পরেই জানা গেল দু’দেশের এই সেনাচুক্তির খবর। যদিও চিন ঠিক কী ভাবে মালদ্বীপকে সামরিক ক্ষেত্রে সাহায্য করবে, তার কিছুই এখনও জানা যায়নি।

    তবু গোটা বিষয়টি নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের ম্যাটার অফ কনসার্ন মূলত দু’টি। প্রথমত, ভারতীয় সেনাকে ‘তাড়িয়ে’ চিনের থেকে বিনামূল্যে মালদ্বীপের সামরিক সাহায্য নেওয়াটা ভারতের কাছে যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন তাঁরা।একইসঙ্গে তাঁদের আশঙ্কা, মালদ্বীপকে হাতে রেখে আদতে ভারত মহাসাগর তথা সংশ্লিষ্ট এলাকায় প্রভাব বাড়াতে চাইছে চিন।

    বিশেষজ্ঞদের দ্বিতীয় চিন্তার কারণ, চিন-মালদ্বীপের ‘ফ্রি’ মিলিটারি চুক্তি! তাঁদের প্রশ্ন— চিন কি আদৌ কাউকে বিনামূল্যে কিছু দিয়েছে? একেবারেই না। বরং ঋণ দেওয়ার অছিলায় কী ভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভস’-এর আওতায় তারা শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর থেকে পাকিস্তানের গদর বন্দর দখল করে নিয়েছে, সেই উদাহরণও দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

    দিনকয়েক আগেই মালদ্বীপের বন্দরে নোঙর করেছে চিনের একটি হাই-টেক গবেষণা জাহাজ। এভাবেই চিন সবদিক থেকেই মালদ্বীপকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে। এ দিনই জানা গিয়েছে, এবারের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে ৭.২ শতাংশ বরাদ্দ বৃদ্ধ করেছে চিন। চিনের যদিও দাবি, মালদ্বীপের সঙ্গে তাদের এই চুক্তির লক্ষ্য কোনও ভাবেই ‘তৃতীয়’ কোনও দেশকে চাপে ফেলা নয়।

    এ দিকে মালদ্বীপের দাবি, চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতেই এই চুক্তি করেছে তারা। এক্স হ্যান্ডেলে বলা হয়— বিনামূল্যেই মালদ্বীপকে সামরিক সাহায্য করবে চিন। একইসঙ্গে ভারতকে আল্টিমেটামও পূর্বনির্ধারিত বলে দাবি তাদের। আগে ১০ মার্চের সময়সীমা দিয়ে ভারতকে সেনা সরাতে বলেছিলেন মুইজ্জু।

    এ দিন তিনি বলেন, ‘ওরা (ভারতীয় সেনারা) কিছুতেই সরছে না। গিয়েও বারবার ফিরে আসছে। উর্দি ছেড়ে, অসামরিক পোশাকে আসছে বলেও খবর আছে আমাদের কাছে। কিন্তু এবার জানিয়ে দিচ্ছি, ১০ মে-র পরে দেশে আর কোনও ভারতীয় সেনা থাকবে না। অসামরিক পোশাকেও যেন কোনও ভারতীয় সেনাকে না দেখি।’
  • Link to this news (এই সময়)