• Justice Abhijit Ganguly : জাস্টিস কেন পলিটিক্সে? পোস্টার হাতে কোর্টে বৃদ্ধ
    এই সময় | ০৬ মার্চ ২০২৪
  • অমিত চক্রবর্তীশ্রীকৃষ্ণ কৌরবদের কাছে গিয়ে সৎ উপদেশ দিয়েও কুরুক্ষেত্র-যুদ্ধ ঠেকাতে পারেননি। অপহৃত সীতাকে ছেড়ে দিতে হনুমানের অনুরোধ রাবণও উপেক্ষা করেছিলেন। ছাড়খাড় হয়েছিল লঙ্কা। সে সবই জানেন কোন্নগরের রতিকান্ত পাল। বছর পঁচাত্তরের বৃদ্ধকে সোম ও মঙ্গলবার কখনও হাইকোর্টের সি-গেট, কখনও হাইকোর্টের উল্টো দিকে বিধানসভার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছেন অনেকেই। হাতে ও বুকে সাধারণ কাগজে লেখা পোস্টার। সেখানে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতি আহ্বান কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ না দেওয়ার। বরং অরাজনৈতিক মঞ্চ গড়ে অসহায় সাধারণ মানুষের পাশে থাকার অনুরোধ।

    রবিবার দুপুরে টিভিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পদত্যাগ ও রাজনীতিতে যোগদানের কথা শোনার পর থেকেই দিশেহারা রতিকান্ত। সরকারি চাকরি থেকে বহুদিন আগে অবসর নেওয়া বৃদ্ধ বলেন, ‘আমার শুধু মনে হয়েছে, উনি ভুল করছেন। ওঁর জায়গা রাজনৈতিক দল নয়। উনি যে ভাবে নিয়োগ মামলায় দুর্নীতি প্রকাশ্যে এনেছেন, তাতে ওঁকে আমাদের মতো মানুষের জন্যে আরও কিছু দিন ওই চেয়ারে দরকার। আমার তো ক্ষমতা নেই ওঁর সঙ্গে দেখা করার। তাই পোস্টার নিয়ে সোমবার সকাল থেকে হাইকোর্টের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। যদি আমার মতো অতিসাধারণের কথা ভেবে উনি মত বদলান।’

    তাঁর আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা প্রমাণ করতে বুকের পোস্টারে দেশের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার জে এম লিংডোর বিবিসিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের অংশও তুলে ধরেছেন। লিংডোর বক্তব্যের নির্যাস-- ‘রাজনীতিবিদরা সমাজের ক্যান্সার’। বৃদ্ধের কথায়, ‘রামায়ণ, মহাভারতের কথা সবাই জানি। আমি বিশ্বাস করি উনি যে ভরসা ওই চেয়ারে বসে সাধারণ মানুষকে জুগিয়েছেন, তাতে তাঁকে রাজনীতির কালো পথে হাঁটতে গিয়ে হারিয়ে ফেলা অন্যায়।’

    কিন্তু মহাভারতে দুর্যোধন কর্ণপাত করেননি শ্রীকৃষ্ণের কথায়। ফল কুরুক্ষেত্রে কৌরবদের পরাজয়। আবার রামায়ণে লঙ্কাদহনের কারণও রাবণের মনোভাব। জাস্টিস গাঙ্গুলির দৃষ্টি আকর্ষণ কি আদৌ করতে পারলেন রতিকান্ত? ঘটনা পরম্পরা তা বলে না। পরিণতি অজানা।
  • Link to this news (এই সময়)