• BJP In West Bengal: কে আসবেন পদ্মে? যোগ-বিয়োগ গেরুয়া শিবিরে
    এই সময় | ০৬ মার্চ ২০২৪
  • এই সময়: বারাসতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভা আজ, বুধবার। কিন্তু বঙ্গ-বিজেপির যাবতীয় তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু ঠিক তার পরের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার। কারণ, ওইদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দেবেন। মঙ্গলবার যা অভিজিৎ নিজেই ঘোষণা করে দিয়েছেন। কিন্তু সেদিন অভিজিৎ ছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেসের আরও বেশ কয়েকজনের গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর কথা। সেই ‘যোগদান’ কর্মসূচির ঘাত-প্রতিঘাত নিয়েই গেরুয়া শিবিরে আপাতত জোর চর্চা।বিজেপির একাংশের মত, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রাক্তন বিচারপতি। ‘দুর্নীতি বিরোধী’ মুখ। তাঁকে দলে নেওয়া যুক্তিযুক্ত। কিন্তু ফের তৃণমূল ভাঙিয়ে নিজেদের দলে নেতা বাড়ানোর আদৌ কোনও প্রয়োজন আছে? কারণ, সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো বিধানসভা ভোটের আগেও একাধিকবার হয়েছিল। লাভ তো কিছুই হয়নি। তা হলে আবার কেন সেই একই পথে হাঁটা? যদিও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব লোকসভা ভোটের মুখে তৃণমূল ভাঙানোর কৌশলেই সায় দিচ্ছেন।

    সম্প্রতি তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিধানসভার প্রাক্তন উপ-মুখ্য সচেতক তাপস রায়। অভিজিতের সঙ্গে তিনিও বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে জোর জল্পনা। এ ছাড়াও ব্যারাকপুর, সল্টলেক ও আসানসোলের তিন প্রভাবশালী নেতার নামও ভাসছে রাজনীতির বাতাসে। রাজ্য বিজেপির এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘বিধানসভা ভোটে আমরা হারার পরে তৃণমূল থেকে আসা অনেকেই আবার নিজেদের পুরোনো দলে ফিরে গিয়েছিলেন। শুনছি, তাঁদেরও কয়েকজন আগামী ৭ তারিখ নতুনভাবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। সেটা হলে, পার্টির নিচুতলার কর্মীরা তা ভালোভাবে নেবেন না।’

    এদিকে, এদিনই একটি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার কথা অস্বীকার করেননি তাপস। জল্পনা রয়েছে লোকসভা ভোটে তিনি উত্তর-কলকাতা থেকে বিজেপির প্রার্থী হতে পারেন। এ প্রসঙ্গে তাপসের মন্তব্য, ‘আগে আমার কাছে প্রস্তাব আসুক, তারপর ভেবে দেখব। আমাকেও ওদের নেওয়া, না-নেওয়ার ব্যাপার আছে। তবে এখনই রাজনীতি ছাড়ছি না। আমার পরিবারও সেটাই চায়।’ তাপস-পর্ব প্রকাশ্যে আসার আগে পর্যন্ত উত্তর-কলকাতা আসনে বিজেপি প্রার্থী হওয়ার দৌঁড়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন স্থানীয় বিজেপি কাউন্সিলার সজল ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘দল যদি তাপসদাকে এখানে প্রার্থী করে তা হলে আমি বলব, আমার থেকে অনেক ভালো প্রার্থী তিনি।’

    লোকসভা ভোটের মুখে বিজেপি যে অন্যান্য দল ভাঙানোর প্রক্রিয়ায় আরও জোর দেবে তার ইঙ্গিত মিলেছিল গত সপ্তাহেই। রাজ্যস্তরে দলের তরফে ‘যোগদান কমিটি’ গড়ে তার আহ্বায়ক করা হয়েছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। তারপরেই তৃণমূলের একগুচ্ছ নেতার বিজেপিতে যোগদানের জল্পনাকে শুভেন্দুর সাফল্য হিসেবেই প্রজেক্ট করতে চাইছে বিজেপির একাংশ।

    এই ‘যোগদান’ আবহে তৃণমূলের ছাত্রনেত্রী রাজন্যা হালদার এদিন দাবি করেছেন তাঁর কাছেও বিজেপিতে নাম লেখানোর ‘অফার’ এসেছিল। তাঁর কথায়, ‘বিজেপির পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল।’ রাজন্যার দাবি, তিনি সেই প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁর সাফ কথা, ‘আগামী ১০ মার্চ ব্রিগেডে তৃণমূল কংগ্রেসের জনগর্জন সভা। আমার ফোকাস সে দিকেই।’ তবে আগামী ৭ তারিখের ‘যোগদান কর্মসূচি’ সম্পর্কে আগাম কিছু বলতে চাইছেন না রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য শুধু বলেন, ‘বিজেপি এখন মহাসমুদ্র। দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে।’
  • Link to this news (এই সময়)