• Cambridge University : বাথরুমে বন্দি ৭ ঘণ্টা! মুক্তি আইলাইনার আর ইয়ারবাডে
    এই সময় | ০৬ মার্চ ২০২৪
  • কেমব্রিজশায়ার: পুরোনো বাড়ি। আর পাঁচটা বাড়ির থেকে তার দেওয়াল যেমন চওড়া, তেমন ভারী তার কাঠের দরজা-জানলা। সেই বাড়ির বাথরুমে যদি কেউ আটকে পড়েন? বেরিয়ে আসার কোনও রাস্তাই যদি আর খোলা না-থাকে? বাড়িতে কেউ নেই, অন্তত চার দিন কারও আসার সম্ভাবনা নেই। বাথরুমে এমন কোনও জানলা নেই, যা গলে বেরিয়ে আসা যাবে। সঙ্গে মোবাইল ফোনও নেই। এই পরিস্থিতিতে কী করবেন? মৃত্যুর অপেক্ষা? বরাতের উপরে সব সঁপে কারও না কারও ঘরে ঢোকার অপেক্ষা?বছর তেত্রিশের ক্রিস্টিনা ইলকো এর কোনওটাই করেননি। সাত ঘণ্টা বাথরুমে আটকে থাকার পরেও স্রেফ আইলাইনার আর ইয়ারবাড ব্যবহার করে বেরিয়ে এসেছেন একা। কারও সাহায্য তাঁর লাগেনি!

    ঘটনা গত বৃহস্পতিবারের। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির শিক্ষাবিদ ইলকো থাকেন কেমব্রিজেরই একটি পুরোনো বাড়িতে। সেই বাড়ি কত পুরোনো? প্রখ্যাত ডাচ পণ্ডিত, লেখক ইরাসমাস থাকতেন সেই বাড়িতে। সেটা ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের আশেপাশের সময়। অতএব, বাড়ির বয়স আন্দাজ করতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। সেটা ইউরোপে ‘কাস্‌ল’ ধরনের বাড়ি তৈরির যুগ। যে বাড়িতে ক্রিস্টিনা থাকেন, সেটাও তেমন। ফলে এই ধরনের একটা বাড়ির বাথরুমে আটকে পড়া যে বেশ বড়সড় বিপদ, এবং এমন একটা পরিস্থিতিতে, তা আলাদা করে বলে দিতে হয় না।

    কী ভাবে আটকে পড়েন ক্রিস্টিনা? তিনি জানিয়েছেন, বাথরুমে শাওয়ারের কাজ করেছিলেন প্লাম্বার। কিন্তু তিনি কাজ করে যাওয়ার সময়ে বাথরুমের ল্যাচ ভেঙে ফেলেন। এবং সে কথা তিনি ক্রিস্টিনাকে জানাননি। ফলে ক্রিস্টিনা বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করতেই তা একেবারে এঁটে যায়। অতঃপর টানাটানি, ধাক্কাধাক্কি সবই বৃথা। ক্রিস্টিনার কথায়, ‘প্রথমে বেশ খানিকক্ষণ কাঁধ দিয়ে জোরে জোরে ধাক্কা দিয়েছিলাম। মনে হয়েছিল ভেঙেই ফেলি দরজাটা। সেটা যে সম্ভব নয়, তা আর ওই বিপদে মাথায় আসেনি। এরপর চিৎকার করলাম। ওই দরজা আর দেওয়াল ভেদ করে আমার গলার শব্দ যাবে কী করে বাইরে?’

    এরপর ক্রিস্টিনা আরও ঘাবড়ে যান এটা ভেবে যে, পরপর চার দিন তাঁর বাড়িতে আর কারও আসার কথা নয়। ভাগ্যক্রমে যদি কেউ চলে এলেন তো ভালো। কিন্তু একমাত্র যাঁর আসা নিশ্চিত ছিল, সেই সাফাইকর্মী পরপর চার দিন আসবেন না। তাঁর কথায়, ‘খাওয়ার জলটুকু নেই। এই অবস্থায় চার দিন কী ভাবে বাঁচব, সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। দম বন্ধ হয়ে আসছিল ভয়ে।’

    কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। ব্যাগে থাকা আইলাইনার আর ইয়ারবাড বের করে নেন। আইলাইনার দিয়ে বহু কষ্টে ল্যাচ নামান। ইয়ারবাডকে একটি হুকের আকারে এনে শেষ পর্যন্ত দরজা খুলতে পারেন সাত ঘণ্টা পর। মজা করে বলছেন, ‘আমি শুনেছিলাম এই বাড়িতে ইরাসমাসের প্রেতাত্মা ঘোরাফেরা করেন। মনে হয়েছিল খুব শিগগিরই তাঁকে আমি সঙ্গ দেবো।’ আর কী শিক্ষা নিয়েছেন ক্রিস্টিনা? বাথরুমের দরজার সেই লক-ই এখন সমূলে উৎপাটিত!
  • Link to this news (এই সময়)