আশিস নন্দী, বারাসতলোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট এখনও ঘোষণা হয়নি। তার আগেই বাংলায় ভোটের দামামা বাজিয়ে দিয়েছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই রাজ্যের কুড়িটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বাংলাকে পাখির চোখ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। আরামবাগ-কৃষ্ণনগরের পর এ বার বারাসতে সভা করবেন নরেন্দ্র মোদী। মোদীর সভা ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা শহর। রাত থেকেই বারাসতে ঢুকতে শুরু করেছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। বিজেপির তরফে তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন জেলা নেতৃত্ব।
বুধবার বারাসতের কাছারি ময়দানে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সভাস্থল পরিদর্শন করেন। সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় রেলের সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেই অনুষ্ঠান শেষ করে সড়কপথে বারাসত কাছারি ময়দানের সভাস্থলে আসবেন। কাছারি ময়দানের সভা থেকেই নারীশক্তির বন্দনা সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।’
নারীশক্তি বন্দনা সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তাই কাছারি ময়দানে প্রচুর সংখ্যক মহিলার উপস্থিতি রাখতে চাইছে গেরুয়া শিবির। সন্দেশখালির মহিলাদের নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রের খবর, গত বিধানসভা ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছিল এ রাজ্যে মহিলাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পায় তৃণমূল। সে কথা মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে মহিলা ভোট টানতে বারাসতের সভাকে নারীশক্তির বন্দনার মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছে দল।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই সারা রাজ্য থেকে দলের কর্মী-সমর্থকরা আসতে শুরু করে দিয়েছেন বারাসতে। বাড়তি গাড়িও ঢুকছে জেলা সদরে। ফলে প্রধানমন্ত্রীর সভার ২৪ ঘণ্টা আগেই বারাসতে যানজট শুরু হয়ে গিয়েছে। বেলা যত গড়িয়েছে, যানজটও তত বেড়েছে। ডাক বাংলো মোড়, চাঁপাডালি মোড়, কলোনি মোড়ে প্রবল যানজটে নাকাল হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। রাতেই উত্তরবঙ্গ থেকে দলের কর্মী-সমর্থকরা চলে আসেন। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস মিত্র বলেন, ‘বারাসতের পাইয়োনিয়ার পার্কের ময়দানে দলের কর্মীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’ সন্ধে থেকেই কর্মীদের জন্য রান্নাবান্না শুরু করে দেওয়া হয়। মেনুতে ছিল ভাত-ডাল-সব্জি।
মঙ্গলবার সভাস্থল পরিদর্শন করেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকারের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। ছিলেন বারাসত রেঞ্জের ডিআইজি ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্পর্শ নিলাঙ্গি। সভাস্থলের নিরাপত্তার খুঁটিনাটি দেখেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসপিজির আধিকারিকদের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখেন পুলিশের কর্তারা।
মঙ্গলবার মোদীর বারাসতে আসার কথা সাড়ে এগারোটা নাগাদ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধামন্ত্রীর আসার আধ ঘন্টা আগে থেকে শহরে ঢোকা সমস্ত গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ভারী গাড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঢুকতেই দেওয়া হবে না। সভাস্থলের পাশেই রয়েছে একটি বাজার। সেই বাজারও বুধবার বন্ধ রাখা রয়েছে। সভাস্থল পরিদর্শনের পর বারাসত পুলিশ জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খারিয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সভার নিরাপত্তার সব দিকই খতিয়ে দেখা হয়েছে। এসপিজির গাইড লাইন অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কি না, তা ও দেখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু সড়ক পথে আসবেন, তাই নিরাপত্তার খাতিরে আধ ঘণ্টা আগেই ডাক বাংলো মোড় থেকে চাঁপাডালি মোড় পর্যন্ত ভারী গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হবে।’