• নার্সিংয়ে চান্স পেতে 'স্যার'-কে প্রায় ২ লাখ দিয়েও হুমকির শিকার, মানসিক অবসাদে ছাত্রী
    ২৪ ঘন্টা | ০৬ মার্চ ২০২৪
  • রণজয় সিংহ: মালদহের মানিকচকে সাইবার প্রতারণার শিকার এবার কলেজ ছাত্রী। সরকারি নার্সিং কোর্সে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রায় ২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিল এলাকারই এক ব্যক্তি। পরিবারের অজান্তে টাকা দিয়ে দেওয়ায় ফলে মানসিক অবসাদে ভুগছে সেই কলেজ ছাত্রী। পরিবার বিষয়টি জানতে পেরে ইতিমধ্যেই সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। তারপরেও প্রতারকের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে হুমকি। আরও টাকা না দিলে মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলে অভিযোগ। কারণ পুলিসে তার জানাশোনা আছে।

    মানিকচকের লালবাথানি এলাকার বাসিন্দা পেশায় চাষি বিপিন সরকার। পরিবারে স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে ২ মেয়ে ১ ছেলে। সকলের বড় মানিকচক কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী বিউটি সরকার। গত বছর জিএনএম ও এএনএম কোর্সে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দেয় বিউটি। তবে সেইসময় সে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। তবে গত বছর ডিসেম্বর মাসে তার কাছে এক অজানা নম্বর থেকে ফল আসে এবং সে নিজেকে গোপাল ঘোষ নামে পরিচয় দেয়। সে বিউটিকে জানায় নার্সিং কোর্সে ভর্তি হতে গেলে তাকে প্রথমে ২৫০০ টাকা অনলাইনে প্রদান করে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। প্রথমে বিউটি রাজি না হলেও পরবর্তীতে সুযোগ পাওয়ার আশায় সেই টাকা প্রদান করে। তারপর থেকেই শুরু হয় সেই প্রতারণার চক্র।বিউটি মন্ডলের দাবি, স্কলারশিপের প্রায় ৩০ হাজার টাকা এবং বাবার দেওয়া প্রায় দেড় লক্ষ টাকা তিনি গোপনে পরিবারকে না জানিয়ে সেই প্রতারককে দিয়েছেন। সেই টাকা তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে সে বিভিন্ন রকম হুমকি দেয়। এমনকি আরও টাকা না দিলে তাকে বিভিন্ন রকম অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলে জানাই সেই প্রতারক। বিষয়টি কিছুদিন আগে সামনে এসেছে পরিবারের। তারপর তারা মালদহ সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। মা সরস্বতী সরকার বলেন, তারা এবিষয়ে কিছুই জানতেন না। জমির ফসল বিক্রি করার সব টাকা মেয়ের কাছেই থাকতো। কিছুদিন আগে তার কাছে টাকা চাইলে জানায় তার কাছে টাকা নেই। তারপরই বাড়ির বৌমার কাছে বিষয়টি জানতে পারি। কিন্তু মেয়ে এই ধরনের চক্রে জড়াবে তা কোনদিন ভাবেনি। প্রায় এক লক্ষ ৮২ হাজার টাকা প্রতারণা হয়েছে তার মেয়ের সঙ্গে। এমনকি এখনো আরও টাকা চাইছে সেই প্রতারক।মেয়ে সেই ভয়ে বর্তমানে মানসিক অবসাদে ভুগছে।প্রতারিত ছাত্রী বলেন, জিএনএম এরজন্য পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আমার এক বান্ধবীও দিয়েছিল। ও আমার বলিছিল ও চান্স পেয়ে যাবে। ওর একটা স্যার আছে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেই ওর সুযোগ হয়ে যাবে। গত ২৯ ডিসেম্বর ওই স্যার আমাকে ফোন করে বলেন, জিএনএমে চান্স পেতে গেলে তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। ওই কথা শুনি সেইসময় আর কিছু বলিনি। এর কিছুপদিন পর আমাকে ফোন করে বলেন, তিনি আমাকে জিএনএমে চান্স পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন। পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র দিয়ে দেওয়া হবে। পরীক্ষায় চান্স না পেলে ওএমআর শিট বদলে দেওয়া হবে।  আমাকে বলল ২৫০০ টাকা পাঠাতে হবে রেজিস্ট্রেশন ফি-র জন্য। তখন ভাবিনি  বিপুল টাকা লাগবে। আমাকে বলে ক্লাসও শুরু হয়ে যাবে তবে মাধ্য়মিক-উচ্চমাধ্য়মিকের পর ক্লাস শুরু হবে। কিছুদিন পরে বলে প্রশ্নপত্রের জন্য ৬০ হাজার টাকা লাগবে। ওই কথা শুনে তিনি আর রাজি হননি। তখনই শুরু হয় পাল্টা হুমকি। শেষপর্যন্ত ওই স্যার বলেন, তার একটি পলিসি আছে। টাকা দিলে সেই পলিসি ম্যাচিওর হয়ে যাবে। তার পরেই তিনি টাকা দেবেন। সেই কথা শুনে আরও টাকা দেন ওই ছাত্রী। সবেমিলিয়ে মোট ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা দেন। ওই স্যার এখন হুমকি দিচ্ছেন, বলছেন  বাড়িতে পুলিস যাবে। অ্যারেস্ট হয়ে যাবে। 
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)