বউ ফেরেনি; বাবাকে দেখার কেউ নেই, কাজে বের হওয়ার আগে ভয়ংকর কাণ্ড করলেন যুবক
২৪ ঘন্টা | ০৭ মার্চ ২০২৪
দেবব্রত ঘোষ: মানসিক অবসাদে জেরে নিজের বাবাকে শ্বাসরোধ করে খুন। এরপর লিলুয়া স্টেশনে চলন্ত ট্রেনের নীচে আত্মঘাতী হওয়া চেষ্টা। বেলুড়ের এক যুবকের সেই চেষ্টা রুখে দিল রেল পুলিস। তার পর যা বেরিয়ে এল তা এককথায় মার্মান্তিক। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আজ ঘটনাটি ঘটে বেলুড়ের রাজেন শেঠ লেনে।
স্থানীয় সূত্রে খবর রাজেন শেঠ লেনে ভাড়া থাকতেন হারাধন ঋত(৭০)। তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছিল আগেই। এক মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে থাকতেন। ছেলে নারায়ণ বেলুড়ের অম্বিকা জুটমিলের স্থায়ী কর্মী। নারায়ণের দুই বিয়ে। কয়েকবছর আগে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের পর ফের কয়েকমাস আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের এক মহিলার সঙ্গে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় নারায়ণের। গত সরস্বতী পুজোর সময় পুত্রকে নিয়ে স্ত্রী মথুরাপুরে বাপেরবাড়ি যান। সেই থেকে তিনি আর ফেরেননি।মঙ্গলবার নারায়ণ তাঁর বিবাহিত দিদি ও আরও এক আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে মথুরাপুর থেকে স্ত্রীকে আনতে যান। সেখানে অনেক চেষ্টা ও বোঝানোর পরও স্ত্রী বেলুড়ে শ্বশুরবাড়ি ফিরতে না চাওয়ায় তাঁরা খালি হাতেই ফিরে আসেন। তাপস সরকার নামে নারায়ণের এক প্রতিবেশী জানান তীব্র মানসিক অবসাদে ভুগছিলো নারায়ণ। সে আজ একটি চিঠি লিখেছিলো তার দিদিকে। জানিয়েছিলো তার স্ত্রী আর ফিরে আসবে না। বাবাকে দেখাশোনা করার কেউ নেই। তাই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।বুধবার সকালে ঘুমিয়ে থাকা বাবাকে মুখে বালিশ চেপে ধরে খুন করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় নারায়ণ। দিদিকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করে লিলুয়া স্টেশনে আত্মঘাতী হওয়ার উদ্দেশে চলে যান। সেখানে ছুটন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টাও করেন তিনি। কিন্তু তার আগেই জি আর পির কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। হারাধনবাবুর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে তদন্ত শুরু করেছে বেলুড় থানা।নারায়ণের প্রতিবেশী তাপস সরকার আরও বলেন, বউ ফেরেনি। তাই হয়তো মানসিক দিক থেকে কোনও সমস্যা হয়ে ছিল। আজ সকাল ছটায় ডিউটি যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই একটি কোর্ট পেপারে লিখেছে, আমার বাবাকে দেখার কেউ নেই। তাই বাবাকে মেরে সুইসাইড করব। এরপর সে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। বাবা ছেলের কোনও ঝগড়া হতো না। যা হয়েছে তা হয়তো ওর স্ত্রীর সঙ্গেই হয়েছে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে বোনকে একটা মেসেজও পাঠিয়েছিল।