মেলায় বসছে জুয়ার আসর, সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বিপাকে জামালপুরের যুবক
২৪ ঘন্টা | ০৭ মার্চ ২০২৪
অরূপ লাহা: ভোট এলেই ’খেলা হবে’ শ্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে বাংলা। তা বলে ’জুয়া খেলায়’ অংশগ্রহন করার জন্যে সামাজিক মাধ্যমে আহ্বান জানানো? আর সেটাই ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে। বিষয়টি জানার পর পুলিস প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে । ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে এমন আহ্বান জানানোর ঘটনায় জড়িত যুবকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি করা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
জামালপুর থানার বেত্রাগড় গ্রামের অধীষ্ঠাত্রী দেবী হলেন শীতলা। বুধবার থেকে গ্রামের মন্দিরে শুরু হয়েছে শীতলা দেবীর পুজো। এই পুজো উপলক্ষে আগামী চারদিন মাতোয়ারা থাকবে বেত্রাগড় গ্রাম । পুজো উপলক্ষে ভক্তদের ঢল নামে গ্রামে । বসে মেলাও। এমন এক ঐতিহ্যশালী পুজো প্রাঙ্গনে ‘জুয়ার আসর’ বসবে বলে সামাজিক মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জানিয়েছে সুরজিত দাস নামে এক যুবক। জামালপুর থানার শুড়েকালনা গ্রামের বাসিন্দা এই যুবক পেশায় লটারি টিকিট বিক্রেতা।সামাজিক মাধ্যমে শীতলা দেবীর ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন,“আজ থেকে চার দিন বেত্রাগড়ে মায়ের তলায় জুয়া চলবে। সকল জুয়া খিলাড়িকে আসার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে'। ’জুয়া খেলায়“ সকলকে অংশগ্রহন করার বার্তা দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একজন লটারি টিকিট বিক্রেতার এমন ’পোস্ট’ দেখে জামালপুলের বহু মানুষ স্তম্ভিত। বিষয়টি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়ে যায় জামালপুরে । বহু মানুষ তাদের মুঠো ফোনে এই বার্তার বিষয়টি বন্দি করে রাখেন।’ আর এই পুজো যাঁরা বংশ পরম্পরার করে আসছেন সেই বংশের সদস্য পার্থ রায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন,শীতলা মায়ের পুজোয় জুয়ার আসর বসানোর স্পর্ধা দেখানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। কেউ আসেপাশে লুকিয়ে কী করছে জানি না। তবে শীতলা মায়ের তলায় চারদিন জুয়ার আসর বসবে বলে যিনি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করেছেন তার কঠিন শাস্তি হোক , এটাই আমি চাই ।’জুয়া খেলায়’ অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বার্তা ছড়ানোর উদ্দেশ্য কী তা সুরজিতের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি প্রথমে হকচকিয়ে যান। পরে তিনি বলেন, আমি জুয়া খেলি না । জুয়া খেলাও চালাই না । তবে যারা জুয়া খেলা চালায় তারা আমায় বলল বুধবার থেকে শুরু করে চারদিন বেত্রাগড় শীতলা তলায় জুয়া খেলা চলবে। যারা জুয়া খেলা চালাবে তাদের অনুরোধেই আমি আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জুয়া খেলার আসর বসার বিষয়টি লিখে পোস্ট করেছি। এখন বুঝতে পারছি এটা করে আমি বড় অপরাধ করে ফেলেছি ।এদিকে এমন ফেসবুক পোস্টের কথা জেনে বর্ধমান আদালতের সিনিয়র আইনজীবী কমল দত্তও স্তম্ভিত হয়ে যান। তিনি বলেন, বিনা সরকারি অনুমতিতে কেউ কোন প্রকার জুয়া খেলা চালাতে পারে না। যদি চালায় তবে সেটা আইনত অপরাধ বলেই বিবেচিত হবে । সমাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে জুয়া খেলায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো আরো বড় অপরাধ। ’আই টি’ এ্যাক্ট অনুযায়ীও এটা অপরাধ। পুলিস নিশ্চই এবিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে কমলবাবু মন্তব্য করেছেন।