• ‌মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়াই কাজ আলোর পথযাত্রী সবিতার ...
    আজকাল | ০৮ মার্চ ২০২৪
  • তীর্থঙ্কর দাস:‌ ভারতের ব্যস্ততম স্টেশনগুলির একটি হাওড়া রেল স্টেশন। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত। প্রত্যেক মুহূর্তে ঘোষণার মাধ্যমে যাত্রীদের জানানো হয় তথ্য। কতজনই বা জানি ঘোষকের পরিচয়! আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আজকাল ডট ইন খোঁজ নিল তারই। উত্তর ২৪ পরগনার মসলন্দপুরের বাসিন্দা সবিতা হালদার। চোখে দেখতে পান না নিজে, কিন্তু অগুনতি যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে আসছেন দিনের পর দিন। মসলন্দপুরে স্থানীয় ভূদেব স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবী ছাত্রী সবিতা। একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় প্রতিশোধ নিতে প্রতিবেশী এক যুবক তাঁর বাড়িতে হানা দেয়। প্রথমে চোখে বালি ছিটিয়ে এবং পরে দু’‌চোখে পেরেক ফুটিয়ে চিরদিনের মত কেড়ে নেয় দৃষ্টিশক্তি। তাঁর কথায় ‘‌২০০১ সালে একটি ছেলে আমাকে প্রপোজ করে। আমি না করে দিয়েছিলাম। তারপর অত কিছু ঘটল। অন্ধকার জীবনটার মধ্যে থেকেই আমি লড়াই করে আলোর দিশা খুঁজে পেয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘‌জীবন মানেই সুন্দর এবং যেভাবে আছি সেভাবেই আমাদের জীবনটা উপভোগ করতে হবে।’‌ বহু জায়গায় চিকিৎসার জন্য ঘুরেও ফেরানো যায়নি দৃষ্টিশক্তি। বাবা পেশায় সবজি বিক্রেতা, মা গৃহবধূ। সংসারের হাল ধরতে এবং নিজের কাছে হার না মানার ইচ্ছা থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু সবিতার। প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করেই রেলের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০২৩ সালের ১০ জুলাই যাত্রীদের পথ দেখাতে ঘোষকের চাকরি পান তিনি। প্রতিদিন সকালে মায়ের সঙ্গে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে যান। মোবাইলের আল্যার্ট শুনে ব্রেল পদ্ধতি শিখে অফিসের সব কাজ দিব্যি সামলে নিচ্ছেন সবিতা। রোজ রাতে কাজ শেষে মায়ের সঙ্গে ফিরে যান বাড়িতে।
  • Link to this news (আজকাল)