'তৃণমূলের তো ভাইপোর চিন্তা, কংগ্রেস ব্যস্ত শাহি সন্তানদের নিয়ে, আপনাদের কথা একমাত্র ভাবে বিজেপি'
২৪ ঘন্টা | ১০ মার্চ ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শিলিগুড়ির কাউয়াখালির সভা থেকে শাসকদল তৃণমূল তো বটেই বাম ও কংগ্রেসকে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একদিকে তৃণমূল যখন তাদের ১ লাখ কোটি টাকারও বেশি পাওনা আদায়ে মরিয়া তখন শিলিগুড়িতে আজ নরেন্দ্র মোদী বলে গেলেন, তৃণমূল সরকার ২৫ লাখ ভুয়ো জবকার্ড তৈরি করে সাধারণ মানুষের টাকা সরিয়ে নিয়েছে। মানুষকে উজ্জ্বলা যোজনা থেকে বঞ্চিত করেছে। ভাইপোর কথা তুলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন নরেন্দ্র মোদী।
কাউয়াখালির সভায় আসতে কিছুটা দেরি যায় মোদীর। তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলেন, উত্তরবঙ্গের সব জেলা থেকে মানুষজন এসেছেন। এখানে ১২ কিলোমিটার রোড শো হয়েছে। ভাবতেই পারিনি। তাই গাড়ি চালাতে দেরি হয়েছে। এখানে এসে এক মিনি ভারত দেখছি। এরকম দেশের খুব কম জায়গাতেই এমনটা দেখা যায়। যে ভাবে আমি জীবন এখনওপর্যন্ত কাটিয়ে এসেছি তাতে দেশের মানুষের জন্য জল, গ্যাস, ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট, স্বাস্থ্যের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। এখানে জল ও জ্বালানির জন্য কী লড়াই লড়তে হয় তা দেখেছি। কিন্তু প্রথমে বাম ও পরে তৃণমূল এসব দেখেনি। তারা তো জমি জালিয়াতি করতে ব্যাস্ত ছিল। আমরা উজ্বলা দিয়েছি। কিন্তু এখানে টিএমসি ১৪ লাখ মহিলাকে উজ্জবলা গ্য়াস থেকে বঞ্চিত করেছে। গতকাল মহিলা দিবসে মহিলাদের জন্য গ্যাসের দাম ১০০ টাকা কম হয়ে গিয়েছে। যে পরিবারের সদস্য হবে সে পরিবারের সুখ দুঃখের সাথী হবে। এইজন্যই দেশের মানুষকে ফ্রি রেশন দিয়েছে মোদী সরকার। কারণ আমরা চাই না কেনাও গরিব মানুষ খালি পেটে শুতে যান। তাই ফ্রি রেশন আরও ৫ বছর বাড়িয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। এতে চা বাগান কর্মীদের উপকার হবে। কিন্তু তৃণমূল সহ ইন্ডি জোট তাতে বাধা দিচ্ছে। এখানে তৃণমূল সরকার আপনাদের রেশনে জালিয়াতি করেছে। এদের নেতা মন্ত্রী রেশন দুর্নীতিতে জেলে রয়েছে। মোদী সরকার ফ্রি স্বাস্থ্য পরিসেবার ব্য়বস্থা করেছে। কিন্তু তৃণমূল আয়ূষমান যোজনা চালু করতে দেয়নি। এরা প্রতিটি ক্ষেত্রে লুটপাট করছে। কেন্দ্র মনরেগার টাকা পাঠায়। কিন্তু এখানের তৃণমূল সরকার ২৫ লাখ ভুয়ো জবকার্ড করেছে। মোদী টাকা পাঠায় আর সেই টাকা তৃণমূল ভ্রষ্ট লোকদেয় দিয়ে দেয়।সন্দেশখালি প্রসঙ্গ টেনে আনলেন মোদী। তিনি বলেন, সন্দেশকালিতে গরিব, দলিত, আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে তৃণমূল নেতারা কী করেছে তার চর্চা গোটা দেশে হচ্ছে। গরিবদের টাকা লুট করাই তৃণমূল তোলবাজদের কাজ। উত্তরবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস, বামেরা এই জায়গাটাকে বিকাশ থেকে বঞ্চিত করেছ। পাশাপাশি সমাজকেও ভাগ করেছে। এত বছর পর অয়োধ্য়ায় রামমন্দিরের নির্মাণ হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা সমাধান করার কথা কেউ ভাবেইনি। কিন্তু মোদী তা করেছে। আমাদের গোর্খা ভাইবোনদের যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে তার প্রতিও বিজেপি সমান সংবেদনশীল। এখন আমার সমাধানের কাছাকাছি। বিজেপি আপনাদের আশা পূর্ণ করার জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করেছে। এখানে পর্যটন ও কাঠের ব্যবসার উত্সাহ দেওয়ার জন্য কাজ করছে। চা উত্পাদেনর জন্য ৪০ হাজার চা উত্পাদকারীর স্বাস্থ্য দেখার জন্য তৈরি বিজেপি। এদের কিষাণ কের্ডিট কার্ড, পি এম ফসল যোজনার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। সেচের জন্য আর্থিক সাহায্য দিয়েছে। গরিবদের জন্য কাজের জন্য বিজেপি সরকারের ১০ সালের মধ্যে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র সীমা থেকে বেরিয়ে এসেছে। যাদের কথা কেউ কখনও ভাবতো না তাদের কথা মোদী ভাবে।তৃণমূলকে বিঁধে নরেন্দ্র মোদী বলেন, মোদী সব গরিবদের সুযোগ তৈরি করেছে। কিন্তু এই কাজ পরিবারবাদীদের একদম পছন্দ নয়। কারণ ওরা রাজনীতিতে ক্ষমতায় থাকার জন্যই এসেছে। তাই ওরা পারিবারিক ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ষড়যন্ত্র করে। ইন্ডিয়া জোট এটাই করে। তৃণমূলের তো ভাইপোর চিন্তা, কংগ্রেস তো তার শাহী পরিবাবের সন্তানদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা। বামেরা এদের দুজনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। আপনাদের কথা ভাবার সময় এদের নেই। আপনাদের জন্য কেই যদি চিন্তা করে থাকে তা হল বিজেপি, এনডিএ। তাই আজ দেশের প্রতিটি মানুষ বলছেন আমি হলাম মোদীর পরিবার। আপনাদের মতো মানুষদের যখন পাকা ঘরে থাকতে দেখি তখন মন ভরে যায়। ভাজপা সরকার এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য কাজ করে চলেছে। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ির মতো হাইওয়ে তৈরি হয়ে যাওয়ার ফলে মানুষের যোগাযোগ সুবিধে হয়েছে। আমাদের সংকল্প হল বিকশিত ভারত। তাই সেই বিকশিত ভারতের জন্য আপনাদের মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে বিকশিত ভারতের সংকল্প নিন।শিলিগুড়িতে একটি সরকারি সভায় একটি সরকারি সভায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উত্তরবঙ্গের জন্য ৪৫০০ কোটি টাকার প্রকল্পের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শিলিগুড়ি-রাধিকাপুর নতুন ট্রেনের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপরই তিনি চলে যান কাউয়াখালির সভায়।