• ডার্বি হাবাসের, লিগের মগডালে মোহনবাগান
    আজকাল | ১১ মার্চ ২০২৪
  • মোহনবাগান - ৩ (কামিন্স, লিস্টন, দিমিত্রি-পেনাল্টি) ইস্টবেঙ্গল - ১ (ক্রেসপো)সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: আরও একবার ডার্বির রং সবুজ মেরুন। ব্রিগেডের রাতে যুবভারতীতে ৩-১ গোলে ইস্টবেঙ্গলকে উড়িয়ে লিগ টেবিলের একনম্বরে চলে গেল মোহনবাগান। গোল করেন জেসন কামিন্স, লিস্টন‌ কোলাসো এবং দিমিত্রি পেত্রাতোস। ইস্টবেঙ্গলের একমাত্র গোল সল ক্রেসপোর। ১৭ ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট বাগানের। মুম্বই সিটির পয়েন্টও এক। তবে এক ম্যাচ কম খেলেছে মোহনবাগান। তারওপর গোল পার্থক্যে এগিয়ে। আইএসএলের ফিরতি বড় ম্যাচ জিতে মরশুমে ডার্বির স্কোরলাইন ২-২ করলেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। একই সঙ্গে বড় ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখলেন বাগানের স্প্যানিশ কোচ। এদিন ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ক্লেইটনের পেনাল্টি মিস। তারপরই খেলা থেকে হারিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। দশ মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল হজম দু"দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়। তিন গোলের মধ্যে দুটো করলেন, একটা করলেন দিমিত্রি। স্বভাবতই ম্যাচের সেরা অজি স্ট্রাইকার। যেভাবে প্রথমার্ধে খেলেছে মোহনবাগান, পাঁচ গোলের একটা সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বিরতির পর ম্যাচে ফেরে ইস্টবেঙ্গল। গোল মুখ বন্ধ করার পাশাপাশি ব্যবধানও কমায়। হাফ টাইমেই ইস্টবেঙ্গল গ্যালারি শূন্য। রবিবাসরীয় সন্ধের ডার্বির নির্যাস এটাই। প্রথমার্ধেই তিন গোল। বিরতিতে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যায় লাল হলুদ সমর্থকের দল। রবি রাতের ডার্বি ফিরিয়ে এনেছিল পাঁচ গোলে হারের স্মৃতি। ২০০৯ সালে করিম বেঞ্চারিফার কোচিংয়ে আই লিগে ৫-৩ গোলে হেরেছিল সুভাষ ভৌমিকের ইস্টবেঙ্গল। সেই আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল লাল হলুদ সমর্থকদের মনে। কিন্তু শেষপর্যন্ত গোলের মালা পড়ে মাঠ ছাড়তে হয়নি ইস্টবেঙ্গলকে। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরে কুয়াদ্রাতের দল। শুরুতে ক্লেইটন‌ সিলভার পেনাল্টি মিস গোটা চিত্র বদলে দিয়েছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের উজ্জীবিত ফুটবলে লজ্জাজনক হারের হাত থেকে বাঁচে লাল হলুদ। ম্যাচের শুরুটা তেড়েফুঁড়ে করে ইস্টবেঙ্গল। এদিন একটু সামনে থেকে খেলতে দেখা যায় নন্দকুমারকে। উইংয়ে খেলান ক্লেইটনকে‌। পেছন থেকে ওপরে উঠছিলেন ব্রাজিলীয়। ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় চুংনুঙ্গার বাড়ানো বল রিসিভ করার সময় বক্সের মধ্যে ক্লেইটনকে ফাউল করেন বিশাল কাইত। পেনাল্টি দেন রেফারি। কিন্তু আবার পেনাল্টি মিস। সুপার কাপের পর আবার। ক্লেইটনের শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচান বিশাল। এখানেই ঘুরে যায় ম্যাচের মোড়। প্রথমার্ধের বাকি সময়টা মোহনবাগানের। ম্যাচের ২৭ মিনিটে সবুজ মেরুনকে এগিয়ে দেন জেসন কামিন্স। কাউকোর শট হেড করে ফেরান হিজাজি।‌ তারপর সাহালের শট পায়ের জঙ্গলে আটকে যায়। তৃতীয় প্রচেষ্টায় দিমিত্রির শট বাঁচান প্রভসুখন। রিটার্ন শটে গোল অজি বিশ্বকাপারের। দশ মিনিট পর ২-০। এবারও সেই পেত্রাতোস। অজি স্ট্রাইকারের শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। আবার বল পান দিমিত্রি। তাঁর পাস থেকে গোল লিস্টনের। দর্শক ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ। একই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল হিজাজি এবং প্যান্টিচ। ডিফেন্সের ভুলে জোড়া গোল। বিরতির ঠিক আগে ৩-০। বল ছাড়াই বক্সের মধ্যে লিস্টনকে ফাউল করেন নন্দকুমার। পেনাল্টি দেন রেফারি। স্পট কিক থেকে গোল করেন দিমিত্রি। দ্বিতীয়ার্ধে প্রত্যাবর্তন ইস্টবেঙ্গলের। পাঁচ গোলের লজ্জা বাঁচিয়ে ব্যবধান কমায় লাল হলুদ। বিরতির পর পুরোটাই আধিপত্য ছিল ইস্টবেঙ্গলের। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটে ফাঁকায় গোল মিস করেন পেত্রাতোস।‌ তাঁর শট বাঁচান গিল। এটা ছাড়া গোলের কোনও পজিটিভ সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বাগান। পিভি বিষ্ণু, সায়ন নামার পর ম্যাচের রাশ ধরে নেয় ইস্টবেঙ্গল। পুরো খেলাই হয় একটা অর্ধে। ম্যাচের ৫৩ মিনিট ৩-১ করেন ক্রেসপো। ক্লেইটনের লং বল চেস্ট ট্র্যাপ করে বাঁ পায়ের শটে গোল চোট থেকে সদ্য ফেরা ইস্টবেঙ্গল মিডিওর। তার দশ মিনিটের মাথায় ব্যবধান কমাতে পারত লাল হলুদ। কিন্তু ক্লেইটনের হেড বাঁচান বিশাল। শেষদিকে বিষ্ণুকে বক্সের মধ্যে ফেলে দেন অভিষেক। পেনাল্টি দেননি রেফারি। বিতর্কিত সিদ্ধান্ত। নব্বই মিনিটে প্রথমার্ধ মোহনবাগানের, দ্বিতীয়ার্ধ ইস্টবেঙ্গলের। তবে প্রথম ৪৫ মিনিটে তিন গোলেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে যায়। ছবি: অভিষেক চক্রবর্তী
  • Link to this news (আজকাল)