পুতুলের মতো, হাতির মতো, ঘোড়ার মতো আলু দেখে মাথায় হাত চাষিদের...
২৪ ঘন্টা | ১১ মার্চ ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এবার আলুর ফলন দেখে চক্ষু চড়ক গাছ হুগলির চাষিদের! লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতির মুখে কয়েকশো চাষি। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, নকল আলু বীজের কারবার ঠেকাতে কি ব্যর্থ প্রশাসন? তারকেশ্বর ব্লকে বিঘার পর বিঘা জমিতে আলুর ফলন দেখে এই প্রশ্নই করতে শুরু করেছেন কয়েকশো আলুচাষি।
এই সময় হুগলি জেলায় পুরোদমে চলছে জমি থেকে আলু তোলার কাজ। সেখানে তারকেশ্বর ব্লকের আস্তারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় উৎপন্ন আলুর আকৃতি দেখে মাথায় হাত কয়েকশো চাষির। কোনও আলুর আকৃতি পুতুলের মতো, কোনওটা হাতির মতো, কোনওটা আবার ঘোড়ার আকৃতির! এই আলু কিনতে ছাইছেন না কোনও ব্যবসায়ীই। অন্য দিকে, এই আলু খাওয়ারও অযোগ্য বলে দাবি চাষিদের।
আলু চাষের শুরুতে নকল আলুবীজ ঠেকাতে রাস্তায় নামে জেলা প্রশাসন। একের পর এক আলু বীজ ব্যবসায়ীর গোডাউনের হানা দেয় তারা। কিন্তু তার পরেও ঠেকানো গেল কি নকল আলু বীজের কারবার? উঠছে প্রশ্ন।চাষিদের অভিযোগ, চাঁপাডাঙা এলাকার আলু বীজ ব্যবসায়ী প্রভাস দুলুই তাঁদের নকল আলু বীজ বিক্রি করেছেন যার ফলে জমিতে আলুর যে ফলন হয়েছে, তাতে তাঁরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আলু চাষের শুরুতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে কিছুটা সময় পিছিয়ে গেলেও চাষের মরসুমে তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তার পরও জমিতে যে ফলন হয়েছে, তা দেখে চক্ষু চড়ক গাছ হওয়ার মতো অবস্থা চাষিদের!আলু বীজ ব্যবসায়ী প্রভাস দুলুইয়ের কাছ থেকে যেসব আলু চাষি আলুর বীজ কিনেছিলেন তাঁদের জমিতে অত্যন্ত নিম্ন মানের আলুর ফলন হয়েছে। অভিযোগ, এই সব আলু না হবে বিক্রি, না যাবে খাওয়া! স্বাভাবিক আলুর যে আকৃতি, সেরকম হয়নি এই আলু। ফলে কোনো ব্যবসায়ীই কিনতে চাইছেন না ওই সব আলু। এমনকি, এই আলু রান্না করে খাওয়ার উপযোগীও নয় বলে অভিযোগ চাষিদের।এ বিষয়ে আলু বীজ ব্যবসায়ী প্রভাস দুলুইয়ের বিরুদ্ধে ব্লক কৃষি দফতরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। প্রভাস দুলুইয়ের বাড়িতে গিয়ে অবশ্য তাঁর দেখে মেলেনি। তবে এ বিষয়ে চাঁপাডাঙার আলু বীজ ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক দেবব্রত দুলুই চাষিদের ক্ষতি স্বীকার করে নিয়ে বলেন, পঞ্জাব থেকে বীজ নিয়ে আসা হয় এ রাজ্যে। এটি যে কোম্পানির বীজ, সেই কোম্পানিকে বিষয়টি জানানো হবে। চাষিদের পাশে থাকারই আশ্বাস দেন বীজ ব্যবসায়ী সংগঠন।এ বিষয়ে তারকেশ্বর বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায় জানান, চাষিরা তাঁর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আলু বীজ সংস্থা চাষিদের ক্ষতিপূরণ না দিলে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।