মরুভূমিতে বালিয়াড়ির উপর এত নক্ষত্র ঝরে পড়ে আছে কেন'
২৪ ঘন্টা | ১২ মার্চ ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মরুভূমিতে বালিয়াড়ির উপর নক্ষত্র? হ্যাঁ, সেরকমই দেখতে লাগে। বিশ্বের মরু অঞ্চলে সাধারণত যেসব চমক দেখা যায়, এটি তারই একটি। পিরামিড আকারের বালুর টিলাগুলো প্রায় এক হাজার ফুট উঁচু। বালিয়াড়ির চূড়ার মাঝখান থেকে বিভিন্ন দিকে গড়িয়ে নেমে যায় বালি। উপর থেকে দেখলে মনে হয় যেন, বালিয়াড়ি শীর্ষ থেকে অনেকগুলি হাত বেরিয়ে নীচের দিকে চলে গিয়েছে! এই স্ট্রাকচারগুলিকেই তারার মতো দেখায়।
তবে বিজ্ঞানীরা এই প্রথম তারকা আকৃতির এই বালিয়াড়ি নিয়ে গভীর অনুসন্ধানমুলক গবেষণা-প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এই গবেষণার মধ্যে দিয়ে মরুভূমির এই সব ভূতাত্ত্বিক গঠনের অভ্যন্তরীণ তথ্য জানা যাচ্ছে। সম্প্রতি মরক্কোর পূর্বাঞ্চলে সাহারা মরুভূমি অঞ্চলে অবস্থিত লালা লালিয়া নামের একটি বালিয়াড়িকে কেন্দ্র করে গবেষণাটি চালানো হয়েছে। আশপাশের অন্যান্য বালিয়াড়ির চেয়ে এটি প্রায় ৩৩০ ফুট উঁচু। প্রায় ২৩০০ ফুট (৭০০ মিটার) চওড়া। এবং এতে প্রায় ৫৫ লাখ মেট্রিক টন বালি আছে।তারকা আকৃতির এসব বালিয়াড়ির ভেতর কী আছে, তা দেখতে গবেষকেরা মাটির নীচে বিশেষ রাডার ব্যবহার করে পরীক্ষা করেছেন। লালা লালিয়া বালিয়াড়িটি গড়ে উঠতে কত সময় লেগেছে, তা নির্ধারণে আলোক বিকিরণ ব্যবহার করা হয়েছে। বালুকণার ভেতর কী পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত আছে, তা জানতে এই প্রক্রিয়াটির ব্যবহার হয়। প্রসঙ্গত, বিশ্বে মরু অঞ্চলে যেসব বালিয়াড়ি আছে, তার প্রায় ১০ শতাংশ তারকা আকৃতির। মঙ্গল গ্রহতেও এ ধরনের বালিয়াড়ি দেখা গিয়েছে।গবেষকেরা পরীক্ষা করে দেখতে পান, সাহারা মরুর এই লালা লালিয়া বালিয়াড়ি বছরে প্রায় ১.৬ ফুট (০.৫ মিটার) করে পশ্চিমের দিকে সরে যাচ্ছে। এ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ভূতত্ত্ববিদ জিওফ ডালার বলেন, বছরকুড়ি আগে প্রথম তারকা আকৃতির বালিয়াড়ির সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে। এগুলোর আকার দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম! তিনি আরও জানান, দিনে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে চেষ্টার পর এই সব বালিয়াড়ির চূড়ায় উঠতে পারার অভিজ্ঞতাও তাঁর হয়েছে।তারকা আকৃতির অনেক বালিয়াড়ির অস্তিত্বের কথা এখন বিজ্ঞানীদের জানা। তারকা আকৃতির বালিয়াড়ির অভ্যন্তরীণ তথ্য প্রকাশ করে গবেষকেরা বলছেন, আরও বেশি করে এ ধরনের প্রাচীন বালিয়াড়ি চিহ্নিত করতে তারা-যুক্ত বালিয়াড়ির এসব তথ্য আগামী দিনের ভূতাত্ত্বিকদের সহায়ক হবে।