'২৬ দিন ধরে কী করছিলেন'' ইলেকটোরাল বন্ড মামলায় শীর্ষ আদালতে প্রশ্নের মুখে এসবিআই
২৪ ঘন্টা | ১২ মার্চ ২০২৪
রাজীব চক্রবর্তী: নির্বাচনী বন্ড মামলার শুনানি চলছে। এসবিআইয়ের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন এবং কয়েকটি সংগঠনের আনা আদালত অবমাননার অভিযোগ শুনছে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ।নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কারা, কোন রাজনৈতিক দলকে, কত টাকা অনুদান দিয়েছে; ছয় মার্চের মধ্যে এসবিআইকে সেই তথ্য নির্বাচন কমিশনকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ১৩ মার্চের মধ্যে সেই তথ্য ওয়েবসাইটে আপলোড করার।
এসবিআই গত ছয় মার্চ এই তথ্য নির্বাচন কমিশনকে দেয়নি। নির্ধারিত সময়ের দু’দিন আগে তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চেয়েছে।এসবিআই-এর পক্ষে সওয়াল করেন হরিশ সালভে। তাঁর বক্তব্য, ‘কেওয়াইসি-র মাধ্যমে নির্বাচনী বন্ড কেনা হয়। অনেক তথ্য। সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাছাড়া অনেকের গোপনীয়তার অধিকার ভঙ্গ হতে পারে’।SBI-এর আবেদনের বিরোধিতা করেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (ADR)। এটি আবেদনকারীদের মধ্যে ছিল। তাঁরা ২০১৭ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকারের আনা নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। ADR বলেছে যে SBI-এর আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে যাতে আসন্ন লোকসভা ভোটের আগে বিস্তারিত প্রকাশ না করা যায়।প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘১৫ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রায় একমাস অতিবাহিত। এতদিনে এসবিআই কী কী পদক্ষেপ করেছে, আবেদনে তার উল্লেখ নেই কেন?’প্রধান বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, ‘আদালতের অন্তর্বর্তী নির্দেশের সময় নির্বাচন কমিশন কিছু তথ্য দিয়েছিল। সে সব সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের সেফ কাস্টোডিতে রয়েছে। এবার আমরা তা প্রকাশ্যে আনবো। পাশাপাশি এসবিআই এতদিনে কী তথ্য জোগাড় করতে পেরেছে, তা-ও প্রকাশ করতে বলব।‘সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘১৫ ফেব্রুয়ারির নির্দেশে নির্বাচনী বন্ড যোজনাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে যোজনাটিকে সম্পূর্ণ ভাবে খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। এই যোজনায় সাধারণ মানুষের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হয়েছিল। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে এই যোজনার সব তথ্য কমিশনের হাতে তুলে দিতে বলা হয়েছিল’।বেঞ্চ আরও বলেছে, ‘এসবিআই বলছে, এই যোজনার নিয়ম অনুযায়ী, বন্ড কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতার কেওয়াইসি ডিজিটালি ব্যাংকের কাছে নেই। সেগুলি সংশ্লিষ্ট ব্রাঞ্চের কাছে ফিজিক্যাল ফরম্যাটে থাকে। পরে সেগুলিকে মুম্বইয়ে প্রধান শাখায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়’।বেঞ্চ বলেছে, ‘১২ এপ্রিল, ২০১৯ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ পর্যন্ত তথ্য মিলিয়ে দেখতে কমপক্ষে ৩ সপ্তাহ সময় চেয়েছে এসবিআই। আবার তারাই জানাচ্ছে, নির্বাচনী বন্ডের ক্রেতা এবং পরে সেগুলি কারা ব্যাংকে ভাঙিয়েছে, সেই তথ্য তাদের কাছে রয়েছে!’আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘এসবিআই-এর আবেদন থেকেই স্পষ্ট যে, সব তথ্য তাদের কাছেই রয়েছে। সারা দেশের ২৯টি ব্রাঞ্চে সব তথ্য রয়েছে। এসবিআইকে নির্দেশ দেওয়া হল, আগামী কাল সব তথ্য কমিশনকে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন সেই তথ্য বিকেল ৫টার মধ্যে সেই তথ্য নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে’।কমিশন আদালতের নির্দেশের কপিও তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে বলে জানানো হয়েছে। এসবিআইয়ের সিএমডি হলফনামা দিয়ে জানাবে আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও কেন তারা মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছে।