সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election)। ঠিক তার আগে দেশজুড়ে কার্যকর হল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ (CAA)। সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই আইন চালুর কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র। আর তার পর থেকেই বাংলাজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জানিয়ে দেন, কোনও বৈষম্য মানা হবে না। সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলবে। যার পালটা দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সাফ জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী ইচ্ছাকৃত ভাবে উসকানিমূলক মন্তব্য করছেন। আবার ভোটের আগে সিএএ লাগু করাকে তৃণমূল-বিজেপি আঁতাঁত বলে দাবি করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডেলে মতুয়া সমাজের ধ্বনি ‘হরি বোল’ লিখে পোস্ট করেন। জানান, ‘‘মোদির গ্যারান্টি মানে প্রতিশ্রুতি পূরণের গ্যারান্টি। ধর্মীয় কারণে ১৯৪৫ সাল থেকে উৎপীড়িত জনগোষ্ঠী মতুয়ারা সমনাগরিকত্বের দাবিতে সরব হয়েছেন। আজ অপেক্ষার অবসান হল।’’
আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সুকান্ত। বলে দেন, ?আগেই আইন হয়ে গিয়েছিল। বিধি জারি করাটাই বাকি। যাঁরা ধর্মীয় কারণে ওপার থেকে এপারে এসেছেন, তাঁরা, তাঁরা নাগরিত্ব পাবেন। এবার প্রমাণ হয়ে যাবে উনি (মমতা) মুসলিমদের মিথ্যা কথা বলে উসকেছিলেন। ওঁর আজকের বক্তব্য়ে উসকানি ছিল।? মমতা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নাগরিকত্ব বাতিল হতে দেবেন না। যার প্রেক্ষিতে সুকান্ত বলেন, ?এটা ওঁর পৈতৃক সম্পত্তি নাকি? লোকসভা, রাজ্যসভা ঠিক করবে কোন আইন লাগু হবে। আজকের ঘোষণায় উদবাস্তু মানুষ, হিন্দুরা আনন্দ করছে।?
পালটা তৃণমূল নেত্রী মমতাবালা ঠাকুর সিএএ-র বিরুদ্ধে ধরনার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ?কী কী নথি লাগবে, সেটাই বলছে না। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যা নথি আছে, আমাদেরও তাই আছে। তাহলে আমরা সবাই নাগরিক। কোনও শর্ত দিয়ে নাগরিকত্ব নেওয়ার পক্ষে আমরা নই। কোথা থেকে মানুষ নথি দেবে, কীভাবে জোগাড় করবে, কেউ জানে না। ভোটের রাজনীতি করছে বিজেপি। সঠিক ভাবে সব তথ্য জানাতে না পারলে আমরা ধরনায় বসব।?
তবে এহেন ঘোষণাকে তৃণমূল আর বিজেপি আঁতাঁত বলেই দাবি করছেন মহম্মদ সেলিম। তাঁর দাবি, ?তৃণমূল আর বিজেপি ভোটের বাজারে ভাগাভাগি রাজনীতি করার জন্য এটাকে (CAA) ব্যবহার করছে। কিন্তু মানুষ সচেতন। নতুন করে পুলওয়ামাও করতে পারবে না, সিএএ এনআরসিও করতে পারবে না।? তিনি প্রশ্ন তোলেন, ?এই আইন তো বাংলার জন্য নয়, দেশের জন্য। তাহলে চার বছর দেরি করল কেন? মতুয়া সম্প্রদায় বুঝতে পারবে, বিজেপি কীভাবে ধাপ্পা দিয়েছে, তৃণমূল কীভাবে মিথ্যে বলেছে।?