অভিরূপ দাস: তৃণমূল কাউন্সিলরের একটা মন্তব্য। তা নিয়ে উঠেছিল বর্ণ বৈষম্যের অভিযোগ। সোমবার ভরা অধিবেশনে তাতে সমাপ্তি টানলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বললেন, ?দল বর্ণবৈষম্যকে সমর্থন করে না। আমার নিজের গায়ের রঙ কালো। দল বর্ণবিদ্বেষী হলে আমাকে মেয়র করত!?
গণ্ডগোলের শুরু কিছুদিন আগে। বাজেট অধিবেশনে ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের বাম কাউন্সিলর মধুছন্দা দেব অভিযোগ করেছিলেন, শহরজুড়ে অতিরিক্ত এলইডি আলো। কিছুটা কমানো হোক। তার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল কাউন্সিলর অরিজিৎ দাস ঠাকুরের মন্তব্য নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। ঠিক কী বলেছিলেন অরিজিৎ?
তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘কলকাতা শহর আগে অন্ধকার ছিল। বর্তমান পুরবোর্ড শহরকে আলোকজ্জ্বল করে তুলেছে।’’বাম কাউন্সিলরকে উদ্দেশ্য করে অরিজিৎ বলেন, ‘‘আপনি এখন যখন রাস্তায় বেরন আপনাকে তো দিব্যি ফর্সা লাগে।’’এমন মন্তব্যে মনঃক্ষুন্ন হন বাম কাউন্সিলর। প্রশ্ন ওঠে, বাম কাউন্সিলরের গায়ের রঙ নিয়েই কি এমন ঠেস দিলেন ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর?
এই ঘটনার পর ক্ষমা চেয়েছিলেন মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। তবে তাতেও মেটেনি না সমস্যা। সম্প্রতি মেয়রের কাছে ডেপুটেশন দেয় বামেরা। এদিন অধিবেশন শুরুর আগে ওয়েলে ওঠেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে মধুছন্দাদির কাছে ক্ষমা চাইছি। ওনারা ডেপুটেশন দিয়েছেন। আমাদের দল তৃণমূল কংগ্রেস বর্ণবৈষম্য, ধর্মবৈষম্যে উৎসাহ দেয় না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মধুছন্দাদির থেকে আমার গায়ের রঙ কালো। বর্ণবৈষম্য থাকলে তৃণমূল কংগ্রেস একজন কালো মানুষকে মেয়র করত না।’’
মেয়রের এই ব্যবহার বামেদের রাগ গলে জল। ভরা অধিবেশনে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ক্ষমা প্রার্থনায় মুগ্ধ বাম কাউন্সিলরও। তিনি বলেন, ‘‘মেয়র যেভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন তাতে এবার আমারই খারাপ লাগছে।’’অন্যদিকে এদিন অরিজিৎ দাস ঠাকুর বলেছেন, ?আমি কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে মধুছন্দা দেবকে ওই কথা বলিনি। আমি ওনাকে সম্মান করি।? আর মধুছন্দা? তিনি ক্ষমা করলেন তৃণমূল কাউন্সিলরকে? বাম কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘ও ছোট ছেলে। আমি তো মায়ের মতো। ভুল করেছে। দেখা হলে ওকে একটু শাসন করে দেব।’’