• 'আমাদের আর উদ্বাস্তু বলবে না', সিএএ লাগু হতেই আবেগপ্রবণ মতুয়ারা ...
    আজকাল | ১৩ মার্চ ২০২৪
  • পল্লবী ঘোষ, ঠাকুরনগর: "দেশভাগের আগেই ওপার থেকে এপার বাংলায়। তাও নিজের দেশ বলতে যেন কিছুই ছিল না। "উদ্বাস্তু" তকমাই ছিল পরিচয়। এবার সেই জ্বালা, যন্ত্রণা থেকে মুক্তি। এবার আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমরা ভারতবাসী।" বলতে বলতে কেঁদে ফেললেন প্রমথ রঞ্জন হাওলাদার। নাগরিকত্ব সংশোধন আইন কার্যকর হতেই ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে উৎসবের আমেজ। বারুণী মেলা শুরু হওয়ার আগেই অকাল উৎসব। সকাল থেকেই ঠাকুরবাড়ি চত্বরে ভিড়। কেউ কেউ বলছেন, "গতকাল সারারাত উত্তেজনায়, আনন্দে ঘুম আসেনি। দীর্ঘদিনের অবহেলা, অত্যাচারের পর অবশেষে মুক্তি।"  ১৯৭০ সালে ওপার বাংলার গোপালগঞ্জ থেকে এদেশে পা রাখেন মণিমোহন মজুমদার। ঠাকুরবাড়ির পাশে তাঁর ছোট্ট দোকান। তিনি বললেন, "অবশেষে বোঝা নামল। এবার আর আমাদের কেউ শরণার্থী, উদ্বাস্তু বলবে না। কাগজপত্র বলতে আছে শুধু আধার কার্ড, ভোটার কার্ড আর প্যান কার্ড। অন্য কোনও নথি নেই। তাই এগুলো ছাড়া আর কোনও কাগজ দেখাতে পারব না।" মণিমোহন বললেন, "আমাদের ভরসা আছে, মোদি সরকার আর কোনও কাগজ দেখতেও চাইবে না।" পাশে দাঁড়িয়ে আরেকজন বললেন, তিনি ১৯৬৫ সালে ভারতে এসেছেন। তাঁর চোখেও জল। আবেগে ভেসে বললেন, "কত লড়াই করেছি। মতুয়ারা কত অত্যাচারের শিকার, কারও ধারণা নেই। আমাদের আর কেউ বহিরাগত বলবে না।" বেলা ১২টা নাগাদ কাঁসর, ঘণ্টা, ঢাক, ঢোল নিয়ে পথে নেমেছেন মতুয়াদের একাংশ। সবার মুখে একটাই কথা, "মোদি, শাহ, শান্তনু ঠাকুর কথা রেখেছেন। দেশে এবার আমরা নিরাপদ।" "চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের একদিন আগে হলেও দেশে ক্যা কার্যকর হবেই।", জোরাল দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। দেরিতে হলেও তাঁর কথাই শেষমেশ সত্যি হল। বিল পাশের প্রায় ৫ বছর পর আইন লাগু হল। আজ ঠাকুরবাড়ির এই উদযাপনে সামিল খোদ শান্তনুও। আজকাল ডট ইনকে শান্তনু বললেন, "হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে সিএএ লাগু হয়েছে এটা আমাদের কাছে বড় পাওনা। বড়মার আন্দোলন আজ সার্থক। আমার মতে, যাঁরা ওপার বাংলা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে এদেশে এসেছেন, ১১ মার্চ তাঁদের কাছে নতুন স্বাধীনতা দিবস। প্রান্তিক মানুষরা প্রথমবার নাগরিকত্বের স্বাদ পাবেন।"
  • Link to this news (আজকাল)