• বিজেপি প্রসঙ্গে মন্তব্য মমতার
    আজকাল | ১৩ মার্চ ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: গেরুয়া শিবির ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করে, হিন্দুত্ববাদের রাজনীতি করে ফায়দা তোলে ভোট ব্যাঙ্কে, দেশের রাজনীতির অলিন্দে একথা বহু চর্চিত। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বললেন, এ হিন্দু সে হিন্দু নয়। সাফ জানালেন ‘‌বিজেপি হিন্দু হিন্দু বলে, সে হিন্দুর তকমা আলাদা।’‌ কী প্রসঙ্গে এই মন্তব্য? মঙ্গলের পর উত্তরবঙ্গে বুধবার ক্যা–এনআরসি নিয়ে মুখ খোলেন মমতা ব্যানার্জি। শুরুতেই তিনি একপ্রকার স্পষ্ট করে বলেন, ক্যা এবং এনআরসির সম্পর্ক রয়েছে। ক্যা প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই তিনি বলেন ‘‌মুসলিম সমাজকে বাদ দিয়েছে সম্পূর্ণ। সঙ্গে হিন্দু, বুদ্ধিস্ট, জৈন, পারসিক, খিস্টানদের ক্যা তে নিয়ে এসেছে। যে নিয়ম বের করেছে তা স্পষ্ট নয়।’‌ তারপরেই মনে করিয়ে দেন, এতে খুব একটা নিশ্চিন্তে থাকার কারণ নেই হিন্দুদেরও। অসমের উদাহরণ টেনে মমতা এদিন বলেন, ‘‌হিন্দুরা ভুলে যাবেন না, অসমে যখন এনআরসি–ক্যা হয়েছিল ১৯ লক্ষের মধ্যে ১৩ লক্ষ হিন্দু বাঙালিও বাদ গিয়েছিল। বিজেপি হিন্দু হিন্দু বলে, ও হিন্দুর তকমা আলাদা।’‌ সঙ্গেই বলেন, গেরুয়া শিবিরের ‘‌হিন্দু’‌ বাঙালির দুর্গা পুজোর হিন্দু নয়, বেদের হিন্দু নয় কিংবা রামকৃষ্ণ–স্বামী বিবেকান্দদের হিন্দু নয়। মমতা বলেন, ‘‌ওরা নতুন করে হিন্দু ধর্মের আমদানি করেছে, যেটা হিন্দু ধর্মকে অসম্মান করছে।’‌ তার সঙ্গেই অনড় বার্তা দিয়ে বলেন, ‘‌ক্যা এনআরসি মানব না।’‌ সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে ২০১৯–এর শেষ থেকে যে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল, পুনরায় ফিরে এসেছে তা। বুধবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ক্যার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এনআরসির। সোমবার কেন্দ্র সরকার ক্যা কার্যকর করেছে দেশ জুড়ে। মঙ্গলবার আশ্বাসবাণী শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়, আতঙ্ক কাটিয়ে বলেছিলেন, প্রয়োজনে জীবন দিয়ে রুখে দেবেন কেন্দ্রের ক্যা। মমতা সাফ জানিয়েছিলেন, তিনি থাকতে বাংলায় কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প হতে দেবেন না। মঙ্গলের পর বুধবারেও তাঁর গলায় একই প্রসঙ্গ। জানালেন, ক্যা এবং এনআরসির সম্পর্ক রয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী ক্যা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আমেরিকার প্রসঙ্গ তুলে আনেন। তিনি বলেন, ‘‌আমেরিকায় নিয়ম আছে ৫ বছর কেউ পড়াশোনা করলেও, একসঙ্গে থাকলে গ্রিন কার্ড পায়, সিটিজেনশিপ পায়। পুরো বিশ্বে তাই।’‌ তারপরেই আসেন ভারতের নিয়ম নিয়ে। কেন্দ্রের নিয়ম প্রসঙ্গে অসমের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকেও হাতিয়ার করেছেন মমতা। তিনি এদিন বলেন, ‘‌অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ক্যা তে কিছু লাভ হবে না, কিছু পাবে না।’‌ কে যে আদতে মানুষের মধ্যে বর্ণবৈষম্য করে তা উল্লেখ করেই বলেন, ‘‌নির্বাচনের আগে এটা ললিপপ। বর্ণবৈষম্যের ক্যা আমি মানি না।’‌ হাবড়ার জনসভায় সকলকে আশ্বস্ত করেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছেন উত্তরবঙ্গে। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গের সরকারি অনুষ্ঠানে উত্তরের পাহাড় ও সমতলের সকলকে মিলেমিশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। মঙ্গলবার ফের সভা ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। সভা থেকে উৎসধারার ঘর, চা বাগান ও উদ্বাস্তু জমির পাট্টা প্রদান সহ একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধন করেন। এদিন জলপাইগুড়ির চা বাগানের ৫০০ জনকে পাট্টা দেওয়া হয়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাঁরা চা বাগানের লাইনে কাজ করেন, এবং চা বাগানের সামনেই থাকেন, তাঁদের সকলকে পাট্টা দেওয়ার পাশাপাশি ঘর তৈরির জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার দেবে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘‌সারা বাংলায় যত উদ্বাস্তু কলোনি আছে, তাদের আমরা স্থায়ী ঠিকানা দিচ্ছি।’‌ তৃণমূল জামানায় উত্তরবঙ্গের কাজের খতিয়ানও এদিন তুলে ধরেন তিনি।
  • Link to this news (আজকাল)