উচ্চমাধ্যমিকের ২ টি সেমেস্টার MCQ ভিত্তিক! বড়সড় ঘোষণা সংসদের
প্রতিদিন | ১৫ মার্চ ২০২৪
দিপালী সেন: সেমেস্টার পদ্ধতি চালুর সঙ্গেই বিরাট বদল আসছে উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষায়। বছরে একবার নয়। দু’বারে হবে উচ্চমাধ্যমিক। প্রথমটি দেড় ঘণ্টার ও দ্বিতীয়টি ২ ঘণ্টার পরীক্ষা। একাদশ শ্রেণির দু’টি সেমেস্টারের পরীক্ষাই হবে দেড় ঘণ্টার। দুটি সেমেস্টার হবে এমসিকিউ ভিত্তিক। বৃহস্পতিবার প্রকাশ করে দেওয়া হল নতুন সংশোধিত ও সেমেস্টারভিত্তিক দ্বিখণ্ডিত পাঠ্যক্রম।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাদশ শ্রেণিতে চালু হচ্ছে সেমেস্টার পদ্ধতি। এই ছাত্রছাত্রীরাই ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবার সেমেস্টার ব্যবস্থায় দেবেন উচ্চমাধ্যমিক। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে সেমেস্টার পদ্ধতি ও নয়া সংশোধিত পাঠ্যক্রমের খুঁটিনাটি জানান উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। একাদশ-দ্বাদশ মিলিয়ে মোট চারটি সেমেস্টার। প্রতি শ্রেণিতে দু’টি করে। একাদশের দু’টি সেমেস্টারকে প্রথম ও দ্বিতীয় এবং দ্বাদশের দু’টি সেমেস্টারকে তৃতীয় ও চতুর্থ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নভেম্বরে হবে বিজোড় তথা প্রথম ও তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা, যা এমসিকিউ ভিত্তিক। মার্চে হবে দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা। সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী ও বর্ণনামূলক প্রশ্নে হবে জোড় সেমেস্টারের পরীক্ষাগুলি। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টার। চতুর্থটি দুই ঘণ্টার।
সংসদ সভাপতি বলেন, “সংসদের গাইডলাইন ও রুটিন অনুযায়ী একাদশের প্রথম ও দ্বিতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষা পরিচালনা করবে স্কুল। দ্বাদশের তৃতীয় ও চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে সংসদ পরিচালনা করবে।” তৃতীয় সেমেস্টার তথা উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষাটি এমসিকিউ ভিত্তিক। যার উত্তর দিতে হবে ওএমআর শিটে। সংসদ সভাপতি জানিয়েছেন, ওএমআর শিটে হওয়া পরীক্ষার মূল্যায়নে নিযুক্ত করা হবে না পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষকদের। সম্পূর্ণ কম্পিউটার ভিত্তিক মূল্যায়ন হবে। সেমেস্টার পদ্ধতিতেও অন্য স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দেবেন ছাত্রছাত্রীরা। দু’টি সেমেস্টার পরীক্ষার জন্য দেওয়া হবে একটাই অ্যাডমিট কার্ড। যা তৃতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষার আগেই দিয়ে দেওয়া হবে।
উভয় শ্রেণিতেই প্র্যাকটিক্যাল ভিত্তিক বিষয়গুলির ক্ষেত্রে এক একটি সেমেস্টারে ৩৫ নম্বরের পরীক্ষা হবে। প্র্যাকটিক্যালে থাকবে ৩০ নম্বর। দুটি সেমেস্টার মিলিয়ে ৩০ শতাংশ নম্বর তথা ২১ নম্বর পেলেই পাস করবেন পরীক্ষার্থী। প্র্যাকটিক্যালে আলাদা করে ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে পরীক্ষার্থীকে। প্রোজেক্ট ভিত্তিক বিষয়গুলিতে সেমেস্টার পিছু ৪০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। এক্ষেত্রে দু’টি সেমেস্টার মিলিয়ে ২৪ নম্বর পেলেই পাস। প্রোজেক্টের ২০ নম্বরেও পেতে হবে ৩০ শতাংশ নম্বর। সংসদ সভাপতি বলেন, “পৃথকভাবে সেমেস্টার ভিত্তিক পাস-ফেল থাকছে না। দুটি সেমেস্টার মিলিয়ে হবে রেজাল্ট। প্র্যাকটিক্যাল বা প্রোজেক্ট বার্ষিক পদ্ধতিতেই হবে।” থাকছে না টেস্ট বা নির্বাচনী পরীক্ষা।
উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, সব বিষয়ের পাঠ্যক্রমকেই সময়োপযোগী করে তোলা হয়েছে। বেশি বদল হয়েছে ভাষা বিষয়গুলিতে। যেমন, দ্বাদশের প্রথম ভাষা বাংলায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে শ্রীজাতর কবিতা। এসেছে পাবলো নেরুদার কবিতাও। একাদশের বাংলায় যুক্ত হয়েছে শঙ্খ ঘোষ অনুবাদিত ভারভারা রাওয়ের ‘চারণ কবি’। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে চালু হচ্ছে তিনটি নতুন বিষয়। অ্যাপ্লিকেশন অফ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সায়েন্স অফ ওয়েলবিয়িং ও সাইবার সিকিউরিটি। পাঁচ বছর ধরে ১০-এর কম পড়ুয়া, সেই কারণে বিষয় তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে গুজরাতি, ফ্রেঞ্চ ও পঞ্জাবি। বদলেছে দু’টি বিষয়ের নামও। অ্যাগ্রোনমি হয়েছে অ্যাগ্রিকালচার। হোম ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ফ্যামিলি রিসোর্সের নতুন নাম হয়েছে হিউম্যান ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট হয়েছে।