তিন মেট্রোর প্রথম যাত্রী হয়ে রেকর্ড প্রভাতের, গঙ্গার তলার মেট্রোর প্রথম সওয়ারি সল্টলেকের রাজীব
প্রতিদিন | ১৭ মার্চ ২০২৪
নব্যেন্দু হাজরা: শিয়ালদহ-সেক্টর ফাইভ, জোকা-তারাতলা, আর এবার নিউ গড়িয়া-রুবি। তিন মেট্রোর উদ্বোধনের দিন প্রথম ট্রেনের প্রথম যাত্রী তিনি। প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। পেশায় স্কুলশিক্ষক প্রভাতবাবু বেলঘরিয়ার বাসিন্দা। নয়া মেট্রোর প্রথম যাত্রী হওয়ার হ্যাট্রিক করে ফেললেন তিনি। বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে বাড়ি। সেখান থেকে রাতেই সোজা চলে এসেছিলেন নিউ গড়িয়া মেট্রো স্টেশনে।
সারারাত স্টেশনের বাইরে বসে থেকে শুক্রবার সকালে প্রথম যাত্রী হিসাবে টিকিট কাউন্টারে লাইন দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করেন তিনি। এবারও নয়া মেট্রোর প্রথম যাত্রী হয়ে মুখে একগাল হাসি। হাতে ছিল কমলালেবু। কিন্তু সকালে হাতে লেবু কেন! প্রশ্ন করতেই প্রভাতবাবু বলেন, ‘‘অরেঞ্জ লাইন, তাই হাতে অরেঞ্জ নিয়ে এসেছি।’’ ছেলের এই কাজে উচ্ছসিত মা। প্রভাতবাবু জানান, তাঁকে এবিষয়ে মা প্রচুর উৎসাহ দিয়েছেন। মেট্রোর তরফে হাতে গোলাপ ফুল দেওয়া হয় তাঁকে। প্রভাতবাবুর কথায়, মেট্রোয় প্রথম যাত্রী হওয়াটা আমার কাছে একটা নেশার মতো হয়ে গিয়েছে। এর আগের দু’বারও স্টেশনে সারারাত কাটিয়েছি। মশার কামড় খেয়েছি। কিন্তু মেট্রো চড়ার উত্তেজনায় কোনও ক্লান্তি আসে না। যদি আলাদা দিনে হাওড়া ময়দান-এসপ্ল্যানেড মেট্রো উদ্বোধন হত, সেখানেও আমি প্রথম হওয়ার জন্য লাইন দিতাম।’’
এদিকে গঙ্গার তলা দিয়ে ছোটা মেট্রোর এদিন প্রথম যাত্রী হয়েছেন সল্টলেকের বাসিন্দা রাজীব রায়। চার বছর আগে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো যেদিন প্রথম সেক্টর ফাইভ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত চলেছিল, সেদিনও তিনিই ছিলেন প্রথম যাত্রী। আর শুক্রবার যখন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর চাকা গঙ্গার তলা দিয়ে গড়াল, সেদিনও তিনিই সেই প্রথম যাত্রী। বলেন, ‘‘রাত দু’টোর সময় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসপ্ল্যানেড চলে এসেছিলাম। গায়ে জ্বর। বাড়িতে বারণ করেছিল। কিন্তু শুনিনি।’’ রাজীববাবু সল্টলেকের এসি ব্লকের বাসিন্দা। শিয়ালদহ-সেক্টর ফাইভ মেট্রো চড়ার দিন তিনি পরিবার নিয়ে স্টেশনে এসেছিলেন। সেদিন হয়েছিলেন প্রথম মেট্রোর দ্বিতীয় যাত্রী।
নিউটাউনের তুষার মণ্ডল এদিন ছিলেন এসপ্ল্যানেড-হাওড়া ময়দান মেট্রোর দ্বিতীয় যাত্রী। সদ্য গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছেন। জানান, এডভেঞ্চার ভালো লাগে। আর সেই টানেই যাওয়া। একেবারে অন্যরকম অনুভূতি। ভোর পাঁচটায় তিনি এসে হাজির হয়েছেন এসপ্ল্যানেড মেট্রোয়। এদিকে হাওড়া ময়দান থেকে প্রথম মেট্রোয় সওয়ার হন দাসনগরের বাসিন্দা ডা. মনোরঞ্জন দেয়াশী। গঙ্গার তলা দিয়ে মেট্রোয় চড়ে উচ্ছসিত তিনিও। বলেন, ‘‘খুব ভালো লাগছে। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান হল।’’