অর্ণব আইচ: বিয়েবাড়িতে মদ্যপ অবস্থায় ধাক্কাধাক্কিতে এক যুবকের মোবাইল ভেঙে ফেলা নিয়ে গোলমাল। তারই জেরে বাইক ছিনিয়ে নিয়ে চলে আসে অন্য পক্ষ। বিষয়টি নিয়ে রবিবার দক্ষিণ কলকাতার গড়ফা এলাকার পালবাজারে গোলমাল চরমে ওঠে। এলাকা শান্ত করতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয় পুলিশকে। উন্মত্ত জনতার আক্রমণে তিন পুলিশ অফিসার আহত হন। তাঁদের মধ্যে দুজনের মাথা ফেটে যায়। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। ঘটনাটি ঘিরে রাত পর্যন্ত গড়ফার ওই এলাকায় উত্তেজনা ছিল। পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে দুই মহিলা-সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পালবাজার এলাকার বাসিন্দা বাদল মণ্ডলের ছেলে শুভজিৎ মণ্ডলের কিছুদিন আগেই কালীঘাটে বিয়ে হয়। শুভজিৎ একটি ক্লিনিকের হয়ে রক্ত সংগ্রহ করে। বিয়ের দু’দিন পরই পালবাজারে বাড়ির কাছেই ছিল শুভজিতের বউভাতের অনুষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা বাদলের কয়েকজন বন্ধু মদ্যপ অবস্থায় প্রথমে নাচানাচি ও তার পর ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। বউভাতের অনুষ্ঠানে যাতে আমন্ত্রিতদের সমস্যা না হয়, তার জন্য গোলমাল থামাতে এগিয়ে আসেন বাদলের ভাগ্নে। তাঁর সঙ্গে মদ্যপ ব্যক্তিদের ধস্তাধ্বস্তি হয়। তারই জেরে বাদলের ভাগ্নের প্রায় ৪০ হাজার টাকার মোবাইল ফোনটি মাটিতে পড়ে ভেঙে যায়। ওই যুবক মোবাইলের দাম চাইলে মদ্যপরা তা এড়িয়ে চলে যায়। তারই জেরে বাদল, তাঁর ছেলে ও ভাগনে গিয়ে অন্য পক্ষের বাইক নিয়ে চলে আসে। রবিবার বিকেলে ওই পক্ষের লোকেরা এসে বাদলদের কাছ থেকে বাইকটি নিতে আসে।
বাদলদের কাছ থেকে বাধা পেতেই শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে গোলমাল। বচসা থেকে তা সংঘর্ষে গিয়ে দাঁড়ায়। গোলমালের খবর পেয়ে গড়ফা থানার এক সাব ইন্সপেক্টর নির্মল দাস থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর রাজেশ সরকারকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁদের উপর হামলা চলে। তাঁদের দিকে ইট ছোড়া হয়। লাঠি ও রড দিয়েও মারা হয় তাঁদের। এতে এএসআইয়ের মাথায় ইটের আঘাত লাগে। আহত হন সাব ইন্সপেক্টরও। খবর পেয়ে থানার সার্জেন্ট প্রিয়ম বণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তখন তাঁর মাথা লক্ষ্য করেও ইট ছোড়া হয়। তিনিও আহত হন। ওই অবস্থায় তাঁরা থানায় খবর দেন। গড়ফা ও আশপাশের থানা থেকে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পৌঁছয়। আহত পুলিশ অফিসারদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চালিয়ে দুই মহিলা-সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে জেরা করা হচ্ছে। বাকিদেরও সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।