Narendra Modi vs Rahul Gandhi : জোট-খোঁচা vs এজেন্সি তোপ, ডুয়েলে মোদী ও রাহুল
এই সময় | ১৮ মার্চ ২০২৪
এই সময়: লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার পরদিনই শুরু দ্বৈরথ। একদিকে অন্ধ্রপ্রদেশের সভা থেকে 'ইন্ডি' জোট (ইন্ডিয়া)-এর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আস্ফালন, অন্যদিকে মুম্বইয়ে 'ইন্ডিয়া'র র্যালি থেকে রাহুলের পাল্টা। ভোটপ্রচারের আঁচে তপ্ত রবিবাসরীয় বাজার।এ দিন অন্ধ্রপ্রদেশের পালনাড়ুতে এনডিএ-র নির্বাচনী বৈঠকে বক্তব্য পেশ করেন মোদী। বুঝিয়ে দেন, 'ইন্ডিয়া' জোটের ফাটল ভোটের আগেই প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। মোদীর দাবি, 'এনডিএ-তে আমরা সকলকে নিয়ে চলি। আর কংগ্রেসের একমাত্র অ্যাজেন্ডা হলো তার বন্ধুদের ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলে দেওয়া। আজ কংগ্রেস ইন্ডি জোট (ইন্ডিয়া) করেছে বাধ্য হয়ে, কিন্তু ওটাই ওদের মানসিকতা। কেরালায় বাম এবং কংগ্রেস পরস্পরের বিরুদ্ধে কী বলেছে, আপনারা শুনেছেন। বাংলায় তৃণমূল এবং বামেদের তরজা দেখেছেন। পাঞ্জাবে কংগ্রেস এবং আপ পরস্পরের বিরুদ্ধে কী ভাষা ব্যবহার করেছে? ভোটের আগে নিজেদের আখের গোছাতে এরা যদি এই ভাবে লড়ে, তা হলে ভেবে দেখুন, ভোটের পরে কী করবে!' কেন্দ্রে এবং রাজ্যে একই দলের 'ডাবল ইঞ্জিন সরকার'-এর তত্ত্ব ফের একবার তুলে ধরে মোদীর দাবি, 'বিকশিত ভারত'-এর পাশাপাশি 'বিকশিত অন্ধ্রপ্রদেশ' গড়ে তোলাও এনডিএ-র লক্ষ্য।
উল্টোদিকে, মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটের সমাবেশে মূলত ইডি-সিবিআই অস্ত্র নিয়েই সরব কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি, 'প্রধানমন্ত্রী মোদীর দুর্নীতির উপর একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে। ইভিএমে তো বটেই, ইডি, সিবিআই, আয়কর বিভাগ-দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেই রাজার (মোদী) আত্মা রয়েছে। হিন্দু ধর্মে শক্তি বলে একটা কথা আছে। আমরা একটা শক্তির বিরুদ্ধে লড়ছি। মোদী সেই শক্তির মুখোশ।' তবে শুধু আক্রমণ নয়, বিজেপিকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন সনিয়া-পুত্র। তাঁর দাবি, 'বিজেপি শোরগোল করতে পারে, কিন্তু সংবিধান বদলের সাহস বিজেপির নেই। সত্য এবং জনতার সমর্থন আমাদের দিকে রয়েছে।' সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে মন্তব্য করেছিলেন, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে 'ধর্মনিরপেক্ষ' শব্দটা মুছে ফেলতে গেলে সংসদের উভয় কক্ষে বিজেপির দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। বিজেপি দল হিসেবে সেই মন্তব্য থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলেও রাহুলের অস্ত্র হেগড়ের সেই মন্তব্যই। পাশাপাশি 'ডাবল ইঞ্জিন' সরকার নিয়ে রাহুলের পাল্টা খোঁচা, 'একজন ভাবেন, কেন্দ্রই পুরো দেশ চালাবে। একজনই সব জানেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং আরএসএসেরই একমাত্র জ্ঞানচক্ষু আছে...চাষি, কৃষক বেকার যুবকদের জ্ঞানই নেই! উল্টোদিকে আমরা মনে করি, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ প্রয়োজন। তা হলেই মানুষের কথা শোনা হবে...।'
পাল্টা আক্রমণের মুখে রাহুলও। বিজেপির মুখতার আব্বাস নকভি এদিন রাহুলকে ইন্ডি জোটের 'বোঝা' বলে কটাক্ষ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সুরেই 'ইন্ডিয়া'র অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নকভি। বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবীশের আবার দাবি, রাহুলের দল কংগ্রেস না থাকলে দেশভাগটাই হতো না। তবে এই ব্যক্তিগত কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্যে মুম্বইয়ে 'ইন্ডিয়া'র র্যালি থেকে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, 'আমাদের লড়াই ঘৃণার মতাদর্শের বিরুদ্ধে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে নয়...' তেজস্বীর এই মন্তব্যে জোটসঙ্গী রাহুলের 'মহব্বত কি দুকান'-এর স্লোগান শুনতে পাচ্ছেন অনেকেই। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, বিজেপি 'ইন্ডি' জোটের ফাটল যত তুলে ধরার চেষ্টা করবে, জোটসঙ্গীর তালে সুর মিলিয়ে পাল্টা দেওয়ার চেষ্টা করবেন 'ইন্ডিয়া'র নেতারাও। জিতবেন কারা? সে উত্তর অবশ্য দেবে জনতা জনার্দনই।