Congress Party : হাত চিহ্নে কাদের ভোট? চূড়ান্ত হলো না বাংলায়
এই সময় | ১৮ মার্চ ২০২৪
এই সময়: প্রার্থী তালিকা নিয়ে রবিবার কংগ্রেসের স্ক্রিনিং কমিটির বৈঠকেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলো না। ফলে বাংলায় কংগ্রেসের প্রার্থী ঘোষণায় আরও বিলম্ব হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে বামেরা আর দেরি করেনি। আলিপুরদুয়ারের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে তারা। আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত এই আসনে বামফ্রন্টের ক্যান্ডিডেট আরএসপি-র মিলি ওঁরাও। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস যে আসনগুলিতে প্রার্থী দিতে চাইছে, তার মধ্যে আলিপুরদুয়ার নেই। অথচ লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় বাংলার যে তিন কেন্দ্রে ভোট হবে, তার মধ্যেই আছে আলিপুরদুয়ার। কেন্দ্রটি গত ভোটে ছিল বিজেপির হাতে।এই কেন্দ্রের প্রার্থী সবার আগে ঘোষণা করেছে তৃণমূল। প্রকাশ চিক বরাইক সেখানে জোড়াফুল শিবিরের প্রার্থী। বিজেপির প্রার্থী মনোজ টিগ্গা। এ বার বামেদের ঘোষণায় কেন্দ্রটিতে ত্রিমুখী লড়াই নিশ্চিত হয়ে গেল। এই সূত্রে আরও একবার ইন্ডিয়া জোট ঘিরে জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে। এমনিতেই বিভিন্ন রাজ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের মনোভাবে ক্ষুণ্ণ বাম নেতৃত্ব। এমন অবস্থায় রবিবার রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ শেষে মুম্বইয়ে জোটের র্যালিতে যোগ না দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটরা।
লোকসভায় কেরালা থেকে কেসি বেণুগোপাল এবং রাহুলের লড়াইয়ে যাওয়াকে বামেরা ভালো ভাবে নেয়নি। এ দিনের র্যালিতে শেষ পর্যন্ত অখিলেশ যাদবও যাননি। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই কংগ্রেসকে কাঠগড়ায় তুলে বাংলায় ‘একলা চলো’ নীতি নিয়ে ৪২টি সিটেই প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছেন। এ বার আলিপুরদুয়ারে বামেরা প্রার্থী ঘোষণা করল। যদিও আলিপুরদুয়ার নিয়ে কংগ্রেস বিশেষ আগ্রহী না হওয়াতেই বাম নেতৃত্বের এই পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস যে ১০-১২ টি আসনে লড়াই করতে চায়, সেখানে কারা প্রার্থী হবেন, তার খসড়া তালিকা এআইসিসি-র কাছে জমা পড়ে গিয়েছে। তবে রবিবার তা চূড়ান্ত হয়নি। আজ, সোমবার কংগ্রেসের সেন্ট্রাল ইলেকশন কমিটির বৈঠক। সেখানেও পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনিশ্চিত। এআইসিসি-র এক নেতার কথায়, ‘সিদ্ধান্তে দেরি হচ্ছে একাধিক কারণে। বেণুগোপাল নিজে এ রাজ্যের বিষয়টি দেখছেন। বিজেপি যাতে ২০১৯-এর থেকে বেশি সিট না পায়, তা নিয়ে এআইসিসি নেতৃত্ব উদ্বিগ্ন। তাই বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ১০-১২ টি আসনের খসড়া তালিকা হাইকমান্ডের কাছে জমা দিলেও তা পুরোপুরি অনুমোদিত হবে কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। লিস্টে সংযোজন বিয়োজনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না কংগ্রেসের একাংশ। প্রদেশ কংগ্রেসের প্রবীণ এক নেতার কথায়, ‘অতীতে যাঁরা কংগ্রেস করেছেন, তাঁদের কেউ কেউ ফিরতে চাইছেন। বিষয়টি পুরোপুরি দিল্লির নেতৃত্ব দেখছেন। কংগ্রেসে কারও ঘরওয়াপসি হলে তাঁর টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনাও আছে। তাই প্রার্থী তালিকা অনুমোদিত হতে দেরি হচ্ছে।’
আলিমুদ্দিন স্ট্রিট অবশ্য ধৈর্য ধরে এগোতে চাইছে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এ দিন বলেন, ‘তৃণমূল এবং বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলিকে একজোট করতে আমরা আলোচনা চালাচ্ছি। যে ভাবে কাপড় স্টিচ করা হয়, সে ভাবে এই সমঝোতা তৈরির চেষ্টা চলছে। তাড়াহুড়ো করছি না।’ নওশাদ সিদ্দিকির আইএসএফ-এর সঙ্গেও রবিবার বৈঠক করছে সিপিএম। ডায়মন্ড হারবারে প্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করেও নওশাদ কেন পিছু হটলেন, সে প্রশ্নের মুখে পড়েছে আইএসএফ। যদিও নওশাদ এ দিন বলেন, ‘দল যদি আমাকে লড়াই করতে বলে, তা হলে আমি ডায়মন্ড হারবারে লড়তে তৈরি।’ তবে বামেদের সঙ্গে সমঝোতা না হলে আইএসএফ পৃথক ভাবে লড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত ভাঙড়ের বিধায়কের। সিপিএম যে আইএসএফকে দু’-একটির বেশি সিট ছাড়বে না, তা নওশাদদের স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।