আজকাল ওয়েবডেস্ক: গরম পড়তেই পানীয় জলের হাহাকার দেখা দিয়েছে মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা ব্লকের বেওয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের রামনগর গ্রামে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দীর্ঘদিন ধরে আবেদন জানিয়েও পর্যাপ্ত পানীয় জল না পাওয়ায় এবার লোকসভা নির্বাচন বয়কটের ডাক, পোস্টার পড়ল গ্রামের দেওয়ালে দেওয়ালে। ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে রবিবার রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার লাগিয়েছে। সোমবার সকালে গ্রামবাসীরা সেই সমস্ত পোস্টারগুলি দেখতে পান। মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা ব্লক মালদা (দক্ষিণ) লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। রামনগর গ্রামের বাসিন্দা শরমা মন্ডল নামে এক মহিলা বলেন, "আজ সকালে আমরা গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে পোস্টার দেখতে পেয়েছি। গ্রামে পানীয় জলের অভাব এবং আবাস যোজনায় দুর্নীতির জন্য এই পোস্টারগুলি পড়েছে।"তাঁর অভিযোগ, "এই এলাকার সরকারি কলগুলি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত জল পড়ে না। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সকলেই গোটা ঘটনাটি জানেন। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে গ্রামে জলকষ্ট তীব্র আকার ধারণ করেছে। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দল আমাদের সমস্যার সমাধান করেনি। তাই আমরা ভোট বয়কটের ডাককে সমর্থন করছি।" মৌসুমি মন্ডল নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, "গ্রামের মাত্র একটি কল থেকে ২০০ পরিবার জল সংগ্রহ করে। ঘরের কাজের জন্য আমরা প্রয়োজনীয় জল পাই না। উপরন্ত গরম পড়তেই পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করেছে।"তিনি আরও বলেন, "জাফরগঞ্জ থেকে পিএইচই গ্রামে জল সরবরাহ করে। কিন্তু সেই জল কখন আসবে এবং কতক্ষন থাকবে কেউ জানে না। তাই আমরা সকলে লোকসভা ভোট বয়কটের ডাককে সমর্থন করছি।" ফারাক্কার তৃণমূল বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, "যে গ্রামে ভোট বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে সেখানে বামেদের এক পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছেন। তিনি এলাকার কোনও কাজ করেন না এবং আবাস যোজনা দুর্নীতিতেও তাঁর নাম জড়িয়েছে।" তৃণমূল বিধায়ক বলেন, "ফারাক্কার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে এলাকায় জল সমস্যা দূর করার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে বেওয়া -১ এবং বেওয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ইতিমধ্যে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে জল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ওই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দূর হবে।" তৃণমূল বিধায়ক গ্রামবাসীদের ভোট বয়কটের ডাক থেকে সরে আসার আবেদন জানান।