• ধর্নায় বসেছিলেন মমতা-সন্দেশখালিতে শান্তি ফেরাতেও তিনিই ভরসা, কমিশনের নজরে সেই রাজীব
    আজ তক | ১৮ মার্চ ২০২৪
  • IPS রাজীব কুমার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব থেকে আস্থাভাজন পুলিশ অফিসার, এমনটাই দাবি করে থাকেন বিরোধিরা। সেই রাজীব কুমারকে লোকসভা ভোটের ঠিক আগে, গত ডিসেম্বরে রাজ্য পুলিশের ডিজি পদে বসিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে নির্বাচনী বিধি চালু হতেই রাজীব কুমারকে ডিজিপি পদ থেকে সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। অর্থাৎ ভোটের সময় রাজীব কুমার এমন কোনও পদে থাকবেন যার সঙ্গে সরাসরি নির্বাচনের কোনও যোগ থাকবে না। 

    কিন্তু কেন সরানো হল রাজীব কুমারকে? এই নিয়ে কমিশনের তরফে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তবে শিগগিরই যে রাজীব কুমারের বদলে অন্য কাউকে পশ্চিমবঙ্গের ডিজি করতে হবে, সেই নির্দেশ মুখ্যসচিবকে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। 

    যদিও এই প্রথম নয়। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজীবকে তদানীন্তন পদ থেকে সরানো হয়েছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট ঘোষণার পর রাজীবকে ডেপুটেশনে দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিরোধী BJP, CPIM বা কংগ্রেস বরাবর রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে থাকে। রাজীব কুমার মুখ্যমন্ত্রীর 'হাতের পুতুল' বলে অভিযোগ করে থাকেন বিরোধী নেতারা। এর পিছনে কারণও রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের জমানায় একাধিক বিতর্কে জড়িয়েছেন রাজীব কুমার। ২০১৩ সালে সারদা মামলায় সিট গঠন করা হয়। যার দায়িত্বে ছিলেন রাজীব কুমার। তখন তিনি বিধাননগর পুলিশের কমিশনার ছিলেন। তবে পরে সেই মামলাতেই নাম জড়িয়ে পড়ে রাজীব কুমারের। তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ লোপাটের মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগও ওঠে। তার তদন্তে নামে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করে, রাজীব কুমার তদন্তে কোনও সাহায্য করছেন না। সেই সময় হাইকোর্টের দ্বারস্থও হতে হয় ওই আইপিএস-কে। এই চিটফান্ডকাণ্ডেই রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তাঁর বাসভবনে যায় সিবিআই। যার প্রতিবাদ করেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেন। যা নিয়ে দেশে তোলপাড় শুরু হয়। 

    প্রসঙ্গত, তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'গুডবুকে' ছিলেন রাজীব কুমার। ২০১৩ সালে বিধাননগর কমিশনারেট তৈরি করেন মমতা। সেখানকার প্রথম কমিশনারের দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজীব কুমারকে। পরবর্তীকালে কলকাতার পুলিশ কমিশনারও হন তিনি। তবে সারদাকাণ্ড বিতর্কে রাজীবের নাম জড়ানোর পর রাজীবকে তথ্য ও প্রযুক্তি দফতরের সচিব পদে বদলি করেন মমতা। তা নিয়েও হয় বিতর্ক। কারণ, ওই পদটি আইএএস ক্যাডারদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। 

    উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা রাজীব কুমার কম্পিউটর সায়েন্সে বি-টেক। তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষ। ১৯৮৯ সালে তিনি আইপিএস হন। কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের দায়িত্বে থাকাকালীন সন্ত্রাসবাদী পাকড়াও, জাল নোট বাজেয়াপ্ত সংক্রান্ত অভিযান, আমোরিকান সেন্টারে ২০০২ সালের হামলা এবং ২০০১ সালে খাদিম কর্তা অপহরণ মামলাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন ও তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছিলেন এই রাজীব কুমারই। আবার সম্প্রতি সন্দেশখালির যে ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় হয়, তাও নিজে হাতে সামলেছেন রাজীব কুমার। 
  • Link to this news (আজ তক)