দুচোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে স্কুলে গিয়েছিল বছর ১৪ এক কিশোরী। তবে স্বপ্নপূরণ তো দূরঅস্ত উলটে তার শেষ পরিণতির কারণ হয়ে দাঁড়াল তার স্কুল। কর্ণাটকের বাগালকোটের ঘটনা নড়িয়ে দিয়েছে গোটা সমাজ এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকে। কর্ণাটকের বাগালকোটের একটি স্কুলে ২০০০ টাকা চুরির অভিযোগ ওঠে বছর ১৪ এক কিশোরীর বিরুদ্ধে।রীতিমতো স্থানীয় একটি দুর্গামন্দিরে ছাত্রীটিকে নিয়ে গিয়ে শপথ নিতে বাধ্য করা হয়। এখানেই শেষ নয়, এরপর ওই ছাত্রীকে কাপড় খুলতে বাধ্য করা হয়। টাকার খোঁজে ছাত্রীকে নগ্ন করে চলে তল্লাসি। টাকা পাওয়া না গেলেও ছাত্রীর চরম হেনস্থা হয়। ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, চরম হেনস্থা সহ্য করতে না পেরে বড়ি ফিরে আত্মঘাতী হয় ছাত্রীটি।
কর্ণাটকের বাগালকোটের এই ঘটনা রীতিমতো উদ্বেগ বাড়িয়েছে অভিভাবকদের। একজন ছাত্র বা ছাত্রী ছোট্ট থেকে যখন বড় হয়, স্কুলে যায় তখন সে সেই স্কুলের গন্ডির মধ্যেই জীবনের নানান রঙিন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। চোদ্দ- পনের বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের মনের মধ্যে থাকে নানান প্রশ্ন।
অভিভাবকদের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও তাদের বেড়ে ওঠার পাশাপাশি শৃঙ্খলার সঙ্গে দয়িত্ব নেওয়ার উপযুক্ত পাঠ দেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কিশোর- কিশোরীদের মনের হদিশ রাখেন না কেউই। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের মধ্যে গর্ব, লজ্জা এবং বিব্রত বোধ বেড়ে ওঠার খবর বোধ হয় রাখেন না কেউই। অন্তত কর্ণাটকের ঘটনা এমনটাই বলছে।
মারধর বা তিরস্কার তাদের রঙিন মনকে দুমড়ে-মুচড়ে দিতে পারে। আর সেই কারণেই পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা আকছারই ঘটছে। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে নম্বর এবং ফলাফলের ইঁদুর দৌড় থেকে কী এবং কারা রক্ষা করবে? যে সমাজে শিশুরা বড় হচ্ছে সেখানে শিশু-কিশোরদের মনের কথা শুনবে কারা? কিশোর-কিশোরীরা জীনে কিছু অর্জন করলে তাদের প্রশংসার সুযোগও খুব কম।
অথচ যখন কারোর সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটে সেটা খুব সহজেই হাওয়ার গতিতে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আর তাতেই ঘটে অঘটন। কিশোর-কিশোরিদের কচি মন তা মেনে নিতে পারে না। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হয়। আর তখই তারা বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। ঠিক যেমনটা হয়েছে কর্ণাটকের এই কিশোরীর সঙ্গে। প্রশ্ন উঠছে, চোদ্দ বছরের এই কিশোরীর মৃত্যুর জন্য দায়ী কে?