• ট্রেনে ঝালমুড়ি খেতে খেতে প্রচারে সৌমিত্র, নাচ দিয়ে জনসংযোগ সুজাতার, জমে উঠছে দুই প্রাক্তনের লড়াই
    আনন্দবাজার | ১৯ মার্চ ২০২৪
  • গত লোকসভা ভোটে তাঁরা ছিলেন ‘পতি-পত্নী’। আদালতের নির্দেশে বিষ্ণুপুরে ঢুকতে পারেননি বলে স্বামী সৌমিত্র খাঁয়ের হয়ে প্রচার করেছিলেন সুজাতা মণ্ডল। বিজেপির টিকিটে জয়ীও হন সৌমিত্র। বিবাহবিচ্ছেদের পর সেই দু’জন এ বার লোকসভা ভোটে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী। সৌমিত্র আবারও বিজেপির প্রার্থী। তৃণমূলের হয়ে লড়াই করছেন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা। সোমবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে দুই অভিনব প্রচারে দেখা গেল যুযুধান দুই প্রার্থীকে। বাঁকুড়া-মশাগ্রাম লোকাল ট্রেনে চড়ে নিত্যযাত্রীদের মধ্যে প্রচার সারলেন পদ্ম প্রার্থী সৌমিত্র। তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা বড়জোড়া ব্লকের বেনাচাপড়া গ্রামে প্রচারে গিয়ে ধামসা মাদলের তালে পা মেলালেন আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে।

    বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে ভোট আগামী ২৫ মে। প্রচারের জন্য এখনও হাতে রয়েছে দু’মাসের বেশি সময়। সময় থাকলেও প্রচারে বিশেষ খামতি রাখতে নারাজ বিজেপি এবং তৃণমূল। সোমবার সাতসকালেই বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র হাজির হন সোনামুখী স্টেশনে। সেখানে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামিকে সঙ্গে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে সৌমিত্র উঠে পড়েন বাঁকুড়া-মশাগ্রাম লাইনের লোকাল ট্রেনে। ট্রেনে চলতেই শুরু হয় সৌমিত্রের প্রচার। প্রচারের ফাঁকে হকারের কাছে ঝালমুড়ি কিনে সহযাত্রীদের সঙ্গে জমিয়ে খেতেও দেখা গেল বিজেপি প্রার্থীকে। সৌমিত্রের কথায়, ‘‘বাঁকুড়া-মশাগ্রাম রেলপথ বিষ্ণুপুর লোকসভার অন্তর্গত। বিশাল এলাকার মানুষের কাছে কার্যত লাইফলাইন এটা। এই এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল যে এই রেলপথ মশাগ্রামের কাছে বর্ধমান হাওড়া লাইনের সঙ্গে যুক্ত করা হোক। আমিও সংসদে বার বার সেই দাবি তুলে ধরেছি। বহু বার চিঠি দিয়েছি রেল মন্ত্রককে। আমার আবেদনে সাড়া দিয়ে কাজও শুরু করেছে রেল। সে সাফল্যই সাধারণ এবং নিত্যযাত্রীদের কাছে তুলে ধরে আগামিদিনে আরও কাজ করার সুযোগ চাইলাম।’’

    অন্য দিকে, বড়জোড়া ব্লকের আদিবাসী প্রধান বেনাচাপড়া গ্রামে প্রচারে গিয়ে জাহের থানে (আদিবাসীদের দেবস্থল) পুজো দেন বিষ্ণুপুরের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা। পুজো শেষে আদিবাসী ঢঙে শাড়ি পরে গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে তাঁকে নাচতে দেখা গেল। প্রচারের ফাঁকে স্থানীয় এক আদিবাসী পরিবারের মাটির দাওয়ায় বসে সকলের সঙ্গে জমিয়ে মুড়ি খান সুজাতা। তৃণমূল প্রার্থী বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ রাজ্যে আদিবাসীদের জন্য যে উন্নয়নের কাজ করেছেন তা সারা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। তাই প্রত্যেক আদিবাসী আমাদের সঙ্গে আছেন। আজ আদিবাসী গ্রামে প্রচারে গিয়েছিলাম। গ্রামের প্রত্যেকেই আমাকে নিজের বাড়ির মেয়ের মতো করে গ্রহণ করেছেন। আমিও তাঁদের এক জন হয়ে জাহের থানে পুজো দিয়েছি। তাঁদের সঙ্গে নাচও করেছি।’’ সব মিলিয়ে প্রাক্তন স্বামী-স্ত্রীর ভোটলড়াই জমে উঠছে বিষ্ণুপুর।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)