শতবর্ষে ফিরে দেখা 'মণিদা'র শিল্পভুবন! যে-ভুবনে একত্রে বসত করে ঐতিহ্য ও আধুনিকতা...
২৪ ঘন্টা | ১৯ মার্চ ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কালপতি গণপতি সুব্রহ্মণ্যন। তবে এ নামে তাঁকে চট করে চিনে নেওয়া কঠিন। তিনি 'কে জি সুব্রহ্মণ্যন'। সকলের কাছে তিনি 'মণিদা' নামে পরিচিত। তিনি আধুনিক ভারতীয় শিল্পকলার বিশিষ্ট নাম। ঐতিহ্য ও আধুনিকতা তাঁর শিল্পে হাত ধরাধরি করে থাকে। ১৯২৪ সালে জন্ম। ২০১২ সালে পদ্মভূষণ পেয়েছেন। ২০১৬ সালে প্রয়াত। সুদীর্ঘ শিল্পীজীবন তাঁর। এ বছরটি তাঁর শতবর্ষ চলছে।
প্রায় সাত দশকে জুড়ে বিস্তৃত তাঁর শিল্পীজীবনে, তাঁর সুবিস্তৃত শিল্পের ক্যানভাসে এসে মিশেছে নানা প্রকরণের স্রোত। শিল্পরসিকেরা বলে থাকেন,সেখানে এসে মিশেছে কেরালার লোকশিল্প, কলকাতার কালীঘাট পেইন্টিং এবং বাংলা ও ওড়িশার পটচিত্রের স্রোত। তাঁর শিল্পরচনায় গভীর ছায়া ফেলে গিয়েছে প্রাচীন ভারতীয় রাজসভার শিল্পও, যাকে আমরা কোর্ট পেইন্টিং বলেই চিনি-জানি। সম্প্রতি প্রখ্যাত এই শিল্পীর কাজ নিয়ে তাঁর শতবর্ষ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। কে.এস. রাধাকৃষ্ণন কতৃক কে জি সুব্রহ্মণ্যনের এই প্রদর্শনীটি শুরু হয়েছিল ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। প্রদর্শনীটি করার জন্য তক্ষশিলা শিক্ষা সমিতিকে সাহায্য করেছেন তিনি।গান্ধীবাদী আদর্শের জন্য পরিচিত ছিলেন কে জি সুব্রহ্মণ্যন। স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। কারারুদ্ধও হয়েছিলেন ব্রিটিশ আমলে। শিল্পী হিসেবে তাঁর জীবনে মোড় আসে ১৯৪৪ সালে। তখন তিনি শান্তিনিকেতনের কলা ভবনে গিয়েছিলেন ছবি নিয়ে পড়তে। গুরু হিসেবে পেয়েছিলেন নন্দলাল বোস, বেনোডের মতো আধুনিক ভারতীয় শিল্পকলার অগ্রগামীদের।কে জি সুব্রহ্মণ্যন তাঁর সমগ্র কর্মজীবনে বহু শিল্প রচনা করেছেন। জীবনের অন্তিম পর্যন্ত বিস্তৃত তাঁর শিল্পকর্মে নানা সময়ে বহুমুখিতা দেখা গিয়েছে। কে জি শান্তিনিকেতনের কলা ভবনে পড়া শেষে বরোদায় অধ্যাপনা করেন। পরে শান্তিনিকেতনে ভিজিটিং ফেলো হিসেবে যোগ দেন। তাঁর জীবনে বরাবর শান্তিনিকেতনের জন্য একটা আলাদা অনুভূতি জেগে ছিল। যা প্রকাশ পেয়েছে তার জীবনশৈলীতেও। তাঁর জন্মশতবার্ষিকীর এই প্রদর্শনীতে ধরা হয়েছে তাঁর বিস্তৃত বিচিত্র শিল্পজবনকে। লিথোগ্রাফ, এচিং থেকে শুরু করে কলম, কালি, জলরঙ, তেল এবং এমনকি পোড়ামাটির টুকরো-সহ বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি কাজ করেছেন। তার সব নমুনাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে। প্রদর্শনীটি সেদিক থেকে শিল্পরসিকদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁকে বোঝার জন্য, তাঁর সময়কে বোঝার জন্য, তাঁর শিল্পভুবনকে এবং তাঁর শিল্পিত মনকে বোঝার জন্য এমন একটি প্রদর্শনী জরুরি ছিল।